প্রতিবেদন প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৩৩ এএম
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের কারণে ভারতের আশ্রয়ে আছেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার ভারতে অবস্থানের ৪৫ দিন অতিক্রান্ত হয়েছে। তবে মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও তিনি এখনো ভারত ছাড়ছেন না। ৪৫ দিনের সীমা পার হওয়ার কারণে তিনি আর ভারতের কূটনৈতিক দায়মুক্তি পাবেন না। বর্তমানে তিনি দিল্লির ‘রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের’ ওপর নির্ভরশীল অবস্থায় ভারতে আছেন। ভারত মানবিক কারণে তাকে আশ্রয় দিয়েছে বলে জানা গেছে।
ভারতীয় কর্তৃপক্ষ শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থানের ভিত্তি সম্পর্কে প্রকাশ্যে কিছু জানায়নি। তবে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রামনিয়াম জয়শঙ্কর বলেছেন, ‘আমরা যে সরকার ক্ষমতায় থাকে, তার সঙ্গেই কাজ করি’। শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থান করছেন, এটা স্বীকার করলেও কীভাবে বা কোন আইনের ভিত্তিতে তিনি আছেন, সে সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, শেখ হাসিনা ভারতের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসাবে পরিচিত। মানবিক বিবেচনায় তাকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অতীতেও ভারত বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের আশ্রয় দিয়েছে। যেমন, ১৯৫৯ সালে চীনের তিব্বত অধিগ্রহণের পর দালাইলামাকে এবং ১৯৯২ সালে আফগানিস্তানের মোহাম্মদ নজিবুল্লাহকে আশ্রয় দিয়েছিল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হলে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা ভারতে আশ্রয় নেন এবং ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আসেন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন জানান, শেখ হাসিনা ভারতে থেকে রাজনৈতিক বক্তব্য দিচ্ছেন, যা কিছুটা অস্বস্তিকর। বিষয়টি অন্তর্বর্তী সরকার ভারতকে জানিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে একটি প্রত্যর্পণ চুক্তি রয়েছে, যা শেখ হাসিনার সরকারই ২০১৩ সালে সই করেছিল। অন্তর্বর্তী সরকার চাইলে সেই চুক্তির আওতায় তাকে দেশে ফেরত আনার দাবি করতে পারে।
তবে ভারত শরণার্থী সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক কনভেনশনে সই করেনি, তাই শেখ হাসিনা শরণার্থী হিসাবে ভারতে অবস্থান করতে পারবেন না। তবে ভারত একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে মানবিক ও রাজনৈতিক বিবেচনায় আশ্রয় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান রাজনৈতিক বিবেচনার ওপর ভিত্তি করে নেওয়া হয়েছে, যেখানে মানবিক দিকটিও গুরুত্ব পেয়েছে।