বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যাপক গণবিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করে এক মাসের বেশি সময় ধরে ভারতে অবস্থান করছেন। দেশে তাকে ফেরানোর দাবি ক্রমেই জোরালো হচ্ছে। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) প্রধান প্রসিকিউটর জানিয়েছেন, শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ২০১০ সালে হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারই এই ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা করেছিল।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধসহ দেড় শতাধিক মামলা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকার ভারতের কাছে তাকে হস্তান্তরের অনুরোধ জানালে, নয়াদিল্লির আইনি প্রতিক্রিয়া কী হবে, তা নিয়ে বিশদ বিশ্লেষণ করেছেন প্রভাষ রঞ্জন, ওপি জিন্দাল গ্লোবাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক।
ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ২০১৩ সালে স্বাক্ষরিত প্রত্যর্পণ চুক্তির অধীনে হাসিনাকে দেশে ফেরত পাঠানোর দাবি উঠেছে। চুক্তি অনুযায়ী, অপরাধে অভিযুক্ত বা দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের প্রত্যর্পণ করা যেতে পারে। যদিও শেখ হাসিনা এখনও আদালতে দোষী প্রমাণিত হননি, তাকে অভিযুক্ত করাই ভারতের জন্য প্রত্যর্পণের প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য যথেষ্ট হতে পারে।
তবে, চুক্তির কিছু ব্যতিক্রম বিধান রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে রাজনৈতিক নেতাদের প্রত্যর্পণ না করার শর্ত। তবে, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ রাজনৈতিক অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয় না। ফলে হাসিনাকে এ আইনে প্রত্যর্পণ থেকে রক্ষা পাওয়ার সুযোগ নেই।
তবে, চুক্তির আরেকটি ধারা অনুযায়ী, যদি প্রমাণ করা যায় যে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ন্যায়বিচার দেয়া হবে না, তাহলে ভারত প্রত্যর্পণ থেকে বিরত থাকতে পারে। এই বিষয়টি হাসিনার সমর্থকরা ভারতের সামনে উপস্থাপন করতে পারে।
পরিস্থিতি দিন দিন আরও জটিল হয়ে উঠছে এবং ভারত কী সিদ্ধান্ত নেবে, তা নির্ভর করছে শেখ হাসিনার প্রতি নয়াদিল্লির মূল্যায়নের ওপর।