বাংলাদেশে ডলার সংকটের কারণে গত জুন মাস থেকে এলসি (লেটার অফ ক্রেডিট) বন্ধ থাকায় আন্তর্জাতিক পর্যায়ের চারটি দেশ—চীন, কানাডা, সৌদি আরব ও মরক্কো—সার সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। এই চার দেশের রপ্তানিকারকরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে ৮ কোটি মার্কিন ডলার পাওনা রয়েছে। বকেয়া অর্থের কারণে এসব দেশ বাংলাদেশকে আর সার সরবরাহ করবে না বলে জানিয়েছে এবং পাওনা আদায়ের জন্য সংশ্লিষ্ট দেশের বাংলাদেশ দূতাবাসে চাপ প্রয়োগ করছে।
কৃষি খাতের জন্য সার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এবং দেশের চাহিদা পূরণে সার আমদানি করতে হয়। কিন্তু ডলার সংকটের কারণে বিদেশি রপ্তানিকারকদের পাওনা পরিশোধে বিলম্ব হওয়ায় কৃষি খাতের ওপর এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। বিদায়ী আওয়ামী লীগ সরকার ডলার সংকট সমাধানে তৎপরতা না নেওয়ায় এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এই চাপ সামলাতে হচ্ছে।
কৃষি মন্ত্রণালয় পরিস্থিতি বিবেচনায় এনে দ্রুত বকেয়া পরিশোধের তাগিদ দিয়েছে এবং অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদকে ডিও লেটার পাঠিয়ে ডলার সংকট সমাধানের জন্য পদক্ষেপ নিতে বলেছে। ইতিমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে নির্দেশনা প্রদান করেছে।
বর্তমানে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) কাছে ৮০ মিলিয়ন ডলারের বকেয়া রয়েছে। ডলার সংকটের কারণে বেসরকারিভাবেও সার আমদানি প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে। ব্যাংক খাতের অস্থিরতার ফলে দরপত্র আহ্বানের পরও বেসরকারি আমদানিকারকরা সাড়া দিচ্ছে না।
অন্যদিকে, দেশের সার মজুদও ক্রমশ কমছে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, বর্তমান মজুদ দিয়ে দেশের চাহিদা মাত্র ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত পূরণ করা সম্ভব হবে, যা দেশের কৃষির জন্য বিপদসংকেত তৈরি করেছে।