প্রকাশ: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪,
রেলপথ মন্ত্রণালয় গত ১৫ বছরেও দুর্নীতিমুক্ত হতে পারেনি। এই সময়ের মধ্যে পাঁচজন মন্ত্রী দায়িত্ব পালন করেছেন এবং প্রতিবারই নতুন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ প্রকল্পে সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়নি এবং ব্যয় ধাপে ধাপে বাড়ানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী রেলপথ নির্মাণে প্রতি কিলোমিটারে ১ কোটি ৮৮ লাখ ৫০ হাজার থেকে ২ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয় হয়, কিন্তু বাংলাদেশে এই ব্যয় ৭ কোটি ৬৩ লাখ ৭০ হাজার ডলার দেখানো হয়েছে।
গত সরকারের দীর্ঘ মেয়াদে রেল খাতে প্রায় ৩ লাখ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৯৫টি প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে, যার ব্যয় হয়েছে সোয়া লাখ কোটি টাকার বেশি। কিন্তু এই প্রকল্পগুলোর বরাদ্দ থেকে ব্যাপক লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে ২৯টি প্রকল্প চলমান রয়েছে, যার মধ্যে প্রতিটি প্রকল্পে দুর্নীতি, সম্পত্তি দখল, টেন্ডার বাণিজ্য, নিয়োগ ও বদলি বাণিজ্য ইত্যাদি ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। রেল খাতের দুর্নীতি থেকে সুবিধাভোগীরা শীর্ষ পর্যায় থেকে শুরু করে স্থানীয় কর্মকর্তাদের পকেটে কোটি কোটি টাকা নিয়েছেন।
গত ১৫ বছরে পাঁচজন মন্ত্রী—সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, ওবায়দুল কাদের, মো. মুজিবুল হক, মো. নূরুল ইসলাম সুজন, এবং মো. জিল্লুল হাকিম—রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। তাদের মধ্যে নূরুল ইসলাম সুজনকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, আর বাকি তিনজন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিশানায় রয়েছেন। অন্যদিকে, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত মারা গেছেন। দুর্নীতির শিকার সাধারণ মানুষ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের খুঁজে বেড়াচ্ছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে। বর্তমান মন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিমের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে এবং তার বিরুদ্ধেও অনুসন্ধান চলছে। ওবায়দুল কাদের ও মুজিবুল হকের বিরুদ্ধেও মামলা রয়েছে।
রেলের চলমান ২৯টি প্রকল্পের জন্য প্রায় পৌনে ২ লাখ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, যার অধিকাংশ মেগা প্রকল্প সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নির্দেশনায় নেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় ব্যয় বৃদ্ধিও শীর্ষপর্যায়ের অনুমোদনের মাধ্যমে হয়েছে।