কাশ্মীরের বুকে অবস্থিত একটি ছোট্ট গ্রাম ‘বাংলাদেশ’, যা অজানা অনেকের কাছেই। ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগর থেকে মাত্র ৮০ কিলোমিটার দূরে এই মনোমুগ্ধকর গ্রামটি অবস্থিত। ব্যান্ডিপোরা জেলার অন্তর্গত এই গ্রামটি লেক উলার এবং মাউন্ট হারমুখের মাঝখানে অবস্থিত। ‘বাংলাদেশ’ নামটি এই গ্রামের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার সময়।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ভারতের পূর্ব পাকিস্তান সীমান্ত এবং জম্মু ও কাশ্মীর সীমান্তে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে। এরই মাঝে একটি বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যায় পাশের গ্রামের জুরিমানজ। তখন জুরিমানজের মানুষজন গ্রামের পাশে খালি জমিতে নতুন করে তাদের ঘরবাড়ি পুনর্নির্মাণ শুরু করে। এসময় তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংবাদ শুনতে পান এবং নতুন গড়ে ওঠা গ্রামটির নাম ‘বাংলাদেশ’ রাখার সিদ্ধান্ত নেন, নতুন রাষ্ট্রের সম্মানে।
বিশেষ এই ঘটনাটি যেন এক আশ্চর্যজনক মিলের উদাহরণ। যেমন পূর্ব পাকিস্তান বাংলাদেশে পরিণত হয়, তেমনি জুরিমানজও নতুন রূপে ‘বাংলাদেশ’ নামে পরিচিত হয়। প্রথমে নামটি মুখে মুখে ছড়ালেও ২০১০ সালে ব্যান্ডিপোরা জেলার জেলা কমিশনারের কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশ’ নামে গ্রামটি নিবন্ধিত হয়। বর্তমানে এই গ্রামে প্রায় ৭০টি পরিবার এবং ৩৫০ জন মানুষ বাস করে।
তবে গ্রামটির নামকরণের পিছনে আরও একটি ব্যাখ্যা রয়েছে। কিছু স্থানীয় লোকজনের মতে, কাশ্মীর সরকারের এক মন্ত্রী গ্রামটির নাম ‘বাংলাদেশ’ রাখার প্রস্তাব দেন এবং গ্রামের মানুষ তা সানন্দে গ্রহণ করে। যেই ব্যাখ্যাই সত্য হোক না কেন, গ্রামবাসীরা তাদের গ্রামের নাম নিয়ে গর্বিত তা স্পষ্ট।