বাংলাদেশ পুনর্গঠন, গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন এবং চুরি হওয়া সম্পদ ফিরিয়ে আনতে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকার স্টেট গেস্ট হাউস যমুনায় এক উচ্চ পর্যায়ের মার্কিন প্রতিনিধিদলের সাথে বৈঠককালে তিনি এই সহায়তা চান।
২০০৬ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তার নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দ্রুত অর্থনৈতিক সংস্কার, বিচারব্যবস্থা ও পুলিশের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর পুনর্গঠনসহ নানা উদ্যোগ নিয়েছে। তিনি বলেন, “এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময় এবং বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি তাৎপর্যপূর্ণ মুহূর্ত।”
প্রধান উপদেষ্টা সরকার গৃহীত সংস্কার কার্যক্রমের রূপরেখা তুলে ধরে জানান, ভোট কারচুপি প্রতিরোধ, বিচারবিভাগ, পুলিশ, সিভিল প্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার এবং সংবিধান সংশোধনের লক্ষ্যে ছয়টি কমিশন গঠন করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, তার সরকার দুর্নীতির সাথে জড়িত ব্যক্তিদের চুরি হওয়া সম্পদ পুনরুদ্ধারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। “আমরা একসময় দুর্নীতির মহাসাগরে নিমজ্জিত ছিলাম,” বলেন প্রধান উপদেষ্টা, দেশ থেকে দুর্নীতি নির্মূলের চ্যালেঞ্জ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে।
মার্কিন প্রতিনিধিদল, যার নেতৃত্বে ছিলেন মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের সহকারী সচিব ব্রেন্ট নায়েম্যান, অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, ওয়াশিংটন ডিসি তার সংস্কার কর্মসূচিকে সমর্থন করতে আগ্রহী।
বৈঠকে মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, তারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গৃহীত সংস্কার কার্যক্রমে কারিগরি এবং আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য আগ্রহী।
ঘণ্টাব্যাপী আলোচনায় অর্থনৈতিক ও আর্থিক সংস্কার, বিনিয়োগ, শ্রম ইস্যু, রোহিঙ্গা সংকট এবং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে প্রধান উপদেষ্টার আসন্ন নিউ ইয়র্ক সফর নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন ডোনাল্ড লু, মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্র সচিব, ব্রেন্ডন লিঞ্চ, সহকারী মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি, আঞ্জালি কৌর, ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর এবং জেরড ম্যাসন, মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের পরিচালক।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফি সিদ্দিকী, এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মুর্শেদ, পররাষ্ট্র সচিব মো. জশিম উদ্দিন এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী।