বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমাতে গিয়ে বিতর্কিত ভূমিকা রাখা পুলিশের প্রায় আট শ সদস্য পলাতক রয়েছেন। আন্দোলনকারীদের হয়রানি, নির্যাতন এবং নির্বিচারে গুলি করে হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে অভিযুক্ত এসব পুলিশ কর্মকর্তার অবস্থান নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ধোঁয়াশা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা গুঞ্জন ছড়ালেও পুলিশের পক্ষ থেকে তাদের অবস্থান সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই।
পলাতক শীর্ষ কর্মকর্তারা
পলাতক পুলিশ সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন পুলিশের শীর্ষ কয়েকজন কর্মকর্তা। এদের মধ্যে আছেন সাবেক এসবি প্রধান মো. মনিরুল ইসলাম, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিবির সাবেক প্রধান মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ, যুগ্ম পুলিশ কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার এবং অ্যাডিশনাল ডিআইজি প্রলয় কুমার জোয়ারদার। এদের বিরুদ্ধে আন্দোলন দমাতে নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগে একাধিক মামলা থাকলেও এখনো তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আসেননি।
আত্মগোপনে আট শ পুলিশ সদস্য
পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর প্রায় আট শ পুলিশ সদস্য আত্মগোপনে চলে যান এবং তারা এখনো কাজে যোগ দেননি। তাদের অবস্থান সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। পুলিশের পক্ষ থেকে বারবার নির্দেশনা দেওয়ার পরও তারা কাজে ফিরছেন না।
মনিরুল ইসলাম ও হারুন-অর-রশীদকে ঘিরে গুঞ্জন
সাবেক এসবি প্রধান মনিরুল ইসলাম ও ডিবির সাবেক প্রধান হারুন-অর-রশীদের অবস্থান নিয়ে ফেসবুকে নানা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। কেউ বলছেন, তারা একটি বিশেষ বাহিনীর নজরদারিতে আছেন, আবার কেউ বলছেন, তারা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অন্তত ২০টি এবং হারুন-অর-রশীদের বিরুদ্ধে অন্তত ৫০টি হত্যা মামলা রয়েছে, তবুও তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন।
ডিএমপির ২৭ সদস্য পলাতক
আন্দোলনের পর ডিএমপির ২৭ সদস্য পলাতক রয়েছেন, যাদের মধ্যে আটজন শীর্ষ কর্মকর্তা। এই তালিকায় আছেন অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ, যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকারসহ আরও কয়েকজন। তবে তাদের বিষয়ে ডিএমপি থেকে এখনো কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
উদ্বেগ ও প্রশ্নবোধক পরিস্থিতি
দেশজুড়ে বিতর্কিত ভূমিকা রাখা এসব শীর্ষ কর্মকর্তার অবস্থান নিয়ে পুলিশের মধ্যেও নানা আলোচনা চলছে। তারা কোথায় আছেন এবং কেন এখনো আইনের আওতায় আসছেন না—এ নিয়ে এক ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে, যা নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলে উদ্বেগ বাড়ছে।