গর্ভাবস্থায় নারীদের শরীরে একাধিক শারীরিক পরিবর্তন আসে, যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে হাড়ের ঘনত্ব কমে যাওয়া বা অস্টিওপোরোসিস। চিকিৎসকদের মতে, গর্ভাবস্থাজনিত অস্টিওপোরোসিসের ফলে হাড় দুর্বল হয়ে যায় এবং ভঙ্গুরতার কারণে চিড় ধরতে বা সহজে ভেঙে যেতে পারে।
স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট নেচারবেস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গর্ভাবস্থায় নারীদের শরীরে হরমোনের পরিবর্তন এবং শারীরিক গঠনের প্রভাবেই এই সমস্যাটি দেখা দেয়। বিশেষ করে, মায়ের শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি থাকলে এই সমস্যা আরও গুরুতর হতে পারে। সাধারণত, গর্ভাবস্থায় মায়ের শরীর থেকে শিশু হাড় ও দাঁতের গঠনের জন্য বেশি ক্যালসিয়াম গ্রহণ করে, যা মায়ের হাড়ের স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলে।
চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী, গর্ভাবস্থায় হাড়ের যত্ন নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। মায়েদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার যেমন দুধ, সবুজ শাক-সবজি এবং অন্যান্য দুগ্ধজাত খাবার রাখা উচিত। প্রয়োজনে ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট গ্রহণেরও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও, ভিটামিন ডি শরীরে ক্যালসিয়াম শোষণে সহায়তা করে, তাই ডিমের কুসুম, মাশরুম ও ফ্যাটি ফিশের পাশাপাশি সূর্যের আলোও ভিটামিন ডি-এর গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে কাজ করে। গর্ভাবস্থায় নিয়মিত ব্যায়াম যেমন হাঁটা, সাঁতার কাটা ও যোগাসন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, তবে কোনও ব্যায়াম শুরু করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
চিকিৎসকরা গর্ভাবস্থায় ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার করার পরামর্শ দিয়েছেন, কারণ এগুলো মা ও শিশুর স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং হাড়কে দুর্বল করে দেয়।
গর্ভাবস্থাজনিত অস্টিওপোরোসিস একটি সাধারণ সমস্যা হলেও, সচেতন জীবনযাপন এবং সঠিক যত্নের মাধ্যমে এই ঝুঁকি থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।