দেশের অর্থনীতির একটি বড় ক্ষেত্র হলো শেয়ারবাজার, যা দীর্ঘদিন ধরে নানা কারসাজির শিকার। আওয়ামী লীগ সরকারের দেড় দশকের শাসনামলে শেয়ারবাজারে একের পর এক কেলেঙ্কারি ও দুর্বৃত্তায়নের ঘটনা ঘটে। এর ফলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা তাদের সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। এসব কারসাজির অন্যতম প্রধান ব্যক্তি হিসেবে আলোচনায় এসেছে সমবায় অধিদপ্তরের ডেপুটি রেজিস্ট্রার আবুল খায়ের হিরো। তবে তার সহযোগী হিসেবে আড়ালে কাজ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান।
অভিযোগ রয়েছে, হিরোর সঙ্গে যোগসাজশে অধ্যাপক মিজানুর রহমান শেয়ারবাজার থেকে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করেছেন। এ সময় তাদের সহযোগিতা করেছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম। তবে হিরো এবং শিবলী বিতর্কে জড়িয়ে পড়লেও অধ্যাপক মিজান এখনো বহাল তবিয়তে আছেন এবং নতুনভাবে নিজের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন।
সম্প্রতি একটি বেসরকারি ব্যাংকের বন্যার্তদের ত্রাণ তহবিলের অনুষ্ঠানে ড. মিজান উপস্থিত থাকায় প্রশ্ন উঠেছে। তিনি ওই ব্যাংকের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত না হলেও বিতর্কিত চেয়ারম্যানের সঙ্গে সখ্যতার কারণে সেখানে উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সূত্র বলছে, অধ্যাপক মিজান একসময় বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তবে খারাপ আচরণ ও সহকর্মীর ওপর হামলার ঘটনায় তাকে সাদা দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। এছাড়া, হিরোর কাছ থেকে অর্থ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন উন্নয়ন কাজেও তিনি বিতর্কের জন্ম দেন।
শেয়ারবাজারে অধ্যাপক মিজানের সম্পৃক্ততা সম্পর্কে জানা যায়, হিরো এবং মিজান সিন্ডিকেট হিসেবে কাজ করে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। হিরোর সঙ্গে তাদের সম্পর্কের মাধ্যমে ঢাকায় ফ্ল্যাট ও দামি গাড়ি কেনার মতো সম্পদ অর্জন করেছেন মিজান।
অধ্যাপক মিজানের বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগের সত্যতা পরীক্ষা করতে বিএসইসি ও অন্যান্য আর্থিক সংস্থার নথিপত্রের দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে, তবে এখনো কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।