মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সশস্ত্র সংঘাত থেকে বাঁচতে সম্প্রতি আরও প্রায় আট হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। বাংলাদেশ সরকার নতুন করে আর কোনো রোহিঙ্গা যেন দেশে প্রবেশ করতে না পারে, সে ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে। এই বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, সরকার নীতিগতভাবে নতুন কোনো রোহিঙ্গা প্রবেশকে স্বাগত না জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যদিও এমন কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া বেদনাদায়ক, তবুও এই পদক্ষেপটি অপরিহার্য বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
তৌহিদ হোসেন আরও বলেন, “আমার কাছে তথ্য আছে যে প্রায় আট হাজার রোহিঙ্গা ইতোমধ্যেই বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে এই বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে আলোচনা হবে।” তিনি উল্লেখ করেন, এই বিষয়টি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করবেন এবং এটি উপদেষ্টা পরিষদেও আলোচনা করা যেতে পারে। তিনি বলেন, সীমান্ত পুরোপুরি সুরক্ষিত রাখা কঠিন, তবে সম্ভাব্য সব প্রচেষ্টা করা হবে এবং নতুন করে রোহিঙ্গা প্রবেশ প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, মিয়ানমারের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন হোসেন, তবে তিনি স্বীকার করেন যে সীমান্ত পুরোপুরি সুরক্ষিত করা একটি চ্যালেঞ্জ।
রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রসঙ্গে হোসেন বলেন, রাখাইন রাজ্যের বেশিরভাগ এলাকা নিয়ন্ত্রণকারী বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ চ্যানেলের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। “আমি মনে করি এটাই এগিয়ে যাওয়ার পথ, তবে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কতটুকু করা যায় তা আমাদের মূল্যায়ন করতে হবে,” বলেন তিনি।
এর আগে, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মর্যাদাপূর্ণ এবং নিরাপদ প্রত্যাবাসনে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডির সহযোগিতা কামনা করেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। সোমবার হাইকমিশনার গ্রান্ডি টেলিফোনে অধ্যাপক ইউনূসকে অভিনন্দন জানান এবং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের আসন্ন অধিবেশনে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনায় অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান। গ্রান্ডি জানিয়েছেন যে তিনি এ বছরের অক্টোবরে বাংলাদেশ সফরের পরিকল্পনা করছেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশু বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়।