প্রশ্ন:
আমি একজন পুরুষ, বয়স ৪৭ বছর ৪ মাস, উচ্চতা ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি, ওজন ৮০ কেজি। প্রতিদিন এক ঘণ্টা হাঁটি, কিন্তু বড় ভুঁড়ির কারণে কোনো পোশাক সহজে পরতে পারি না। শরীরের অন্য জায়গার তুলনায় পেটই বেশি ভোগাচ্ছে। আমি তিনবেলা ভাত খাই, তবে খুব বেশি খাই না। কীভাবে ভুঁড়ি কমাতে পারি?
উত্তর:
আপনার শরীরের ওজন ৯ কেজি বেশি আছে, এবং পেটে মেদ জমেছে। অনেক কারণে পেটে মেদ জমে, যা ‘বেলি ফ্যাট’ বা অ্যাবডোমিনাল ফ্যাট হিসেবে পরিচিত। এর পেছনে অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে।
১. সুষম খাবারের অভাব:
যখন কেউ উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার (যেমন ডুবোতেলে ভাজা, চর্বিজাতীয়, মিষ্টি, ড্রিংকস ইত্যাদি) বেশি পরিমাণে গ্রহণ করেন এবং কম ক্যালরি ও আঁশযুক্ত খাবার কম খেয়ে থাকেন, তখন ধীরে ধীরে শরীরের ওজন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পেটের মেদও বাড়ে।
২. শারীরিক পরিশ্রমের অভাব:
খাবার খাওয়ার পরপরই শুয়ে-বসে থাকা বা ব্যায়াম না করলে পেটে মেদ জমতে থাকে।
৩. রাত জাগা ও কম ঘুম:
কম ঘুম শরীরের ভিসেরাল ফ্যাটসহ অ্যাবডোমিনাল ফ্যাট বাড়ায়।
পেটের মেদ কমানোর উপায়:
১. উচ্চমানের আমিষ ও আঁশসমৃদ্ধ খাবার:
শরীরের চাহিদা অনুযায়ী শর্করাজাতীয় খাবার গ্রহণ করুন এবং ওমেগা-৩–সমৃদ্ধ মাছ বা খাবার বেশি খাওয়ার অভ্যাস করুন।
২. নিষিদ্ধ খাদ্য:
মিষ্টিজাতীয় খাবার, পরিশোধিত শর্করা, ড্রিংকস, প্রক্রিয়াজাত খাবার, উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার, ফাস্ট ফুড, এবং চর্বিযুক্ত খাবার বাদ দিতে হবে।
- ফল খাওয়ার অভ্যাস:
ফলের জুস না খেয়ে আস্ত ফল খান, যাতে আঁশসহ পুষ্টি পাওয়া যায়।
৪. প্রোবায়োটিক গ্রহণ:
খাওয়ার পর টক দই খেলে পাকস্থলী ভালো থাকে।
৫. পর্যাপ্ত পানি পান:
খাওয়ার সময় বা খাওয়ার পরপরই নয়, বরং খাওয়ার ২০ থেকে ২৫ মিনিট পর পানি পান করুন।
৬. মানসিক চাপ কমানো:
স্ট্রেস কমানোর মাধ্যমে কর্টিসল হরমোনের নিঃসরণ কমানো যায়, যা পেটে মেদ জমার আশঙ্কা কমায়।
৭. নিয়মিত ব্যায়াম:
প্রতিদিন ব্যায়াম, বিশেষ করে পেটের ব্যায়াম করলে ধীরে ধীরে পেটের মেদ ঝরানো সম্ভব।
এই সাধারণ নির্দেশনা অনুসরণ করলে আপনার পেটের মেদ কমাতে সহায়তা পাবেন। তবে আপনার জন্য একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়া বিশেষভাবে প্রয়োজন।