নাটোর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শহিদুল ইসলাম বকুলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তদন্ত শুরুর পর, গত ২ সেপ্টেম্বর সোমবার, আদালত শহিদুল ইসলাম বকুলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
তথ্যসূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে শহিদুল ইসলাম বকুল নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে ২০২৩ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও তিনি পরাজিত হন। সংসদ সদস্য থাকাকালীন সময়ে, বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত বিপুল সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।
শহিদুল ইসলাম বকুলের ২০১৮ এবং ২০২৩ সালের নির্বাচনী হলফনামায় দেখা যায়, ২০১৮ সালে তার সম্পদ ছিল ৯ লাখ ৬৯ হাজার টাকা। কিন্তু ২০২৩ সালে তার সম্পদ প্রায় ২৪ গুণ বেড়ে দাঁড়ায় ২ কোটি ৪১ লাখ ৭৪ হাজার ৬২৬ টাকায়। তার বার্ষিক আয়ও ২০১৮ সালের ২ লাখ ৬৫ হাজার টাকা থেকে বেড়ে ২০২৩ সালে হয় ১ কোটি ৭ লাখ ৫৪৮ টাকা। এছাড়া ২০১৮ সালে তার স্ত্রীর নামে কোনো আয় না থাকলেও ২০২৩ সালে তার স্ত্রীর নামে ১০ লাখ ৭ হাজার ১৫৫ টাকা আয় দেখানো হয়। এমপি থাকার সময় শহিদুল ইসলাম বকুল ১ কোটি ৩৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের দুটি হার্ড জিপ গাড়ির মালিকও হন।
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) শহিদুল ইসলাম বকুলসহ অন্যান্য সংসদ সদস্য প্রার্থীদের সম্পদ বৃদ্ধির চিত্র তুলে ধরে। টিআইবির গবেষণার ভিত্তিতে, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম সারওয়ার হোসেন শহিদুল ইসলাম বকুলসহ আওয়ামী লীগের ৪১ জন মন্ত্রী ও এমপির অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের তদন্ত চান। এর পরিপ্রেক্ষিতে, ১৯ আগস্ট দুদক অভিযুক্ত মন্ত্রী-এমপিদের দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয়।
তদন্ত শুরু হওয়ার পর, আদালত শহিদুল ইসলাম বকুলসহ আরও ৮ সাবেক এমপি ও ১৮ মন্ত্রীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন।