রাওয়ালপিন্ডিতে গর্জে উঠল বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসানের ব্যাট থেকে ছুটে যাওয়া শট বাউন্ডারিতে আঘাত করার সাথে সাথেই মাঠে ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশের জয়ধ্বনি। মুশফিকুর রহিমের বজ্রকণ্ঠের হুঙ্কার স্টাম্প মাইকে ধরা পড়লে, টিভি পর্দায় দেখা যায় ড্রেসিং রুমে দাঁড়িয়ে চিৎকার করছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। বাংলাদেশের এই জয়ের ধ্বনি রাওয়ালপিন্ডি থেকে গোটা পাকিস্তানে ছড়িয়ে পড়ল। পাকিস্তানের বুকে বাংলাদেশ উদযাপন করল এক ঐতিহাসিক বিজয়।
দ্বিতীয় টেস্টে পাকিস্তানকে ৬ উইকেট হারিয়ে সিরিজে ২-০ ব্যবধানে জয়লাভ করল বাংলাদেশ। এই জয় দেশের বাইরে বাংলাদেশের মাত্র দ্বিতীয় সিরিজ জয়, তবে পূর্ণ শক্তির দলের বিপক্ষে এটি প্রথম। ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় সারির দলের বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে জয়লাভ করলেও, এবার পূর্ণ শক্তির পাকিস্তানের বিপক্ষে এই জয় বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে এক অনন্য স্মরণীয় ঘটনা।
শেষ ইনিংসে ১৮৫ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শেষ দিনে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ১৪৩ রান। ধীরস্থির ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রেখেছে ম্যাচটি। যদিও কোনো ব্যাটসম্যান ফিফটি করতে পারেননি, তবে সম্মিলিত দলীয় পারফরম্যান্সের জয়ে সহজেই জিতেছে বাংলাদেশ।
ম্যাচের তৃতীয় দিনে মাত্র ২৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের পরিস্থিতি যখন সংকটাপন্ন ছিল, তখন থেকে এভাবে ম্যাচ জিতে যাওয়া রূপকথার মতোই। এমন জয় টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসেও আলাদা জায়গা করে নেবে।
বিজয়ের আনন্দে স্টেডিয়ামের সাউন্ডবক্সে বেজে উঠল, “লাল সবুজের বিজয় নিশান হাতে হাতে ছড়িয়ে দাও…”। বহু প্রহরের ব্যর্থতা ও হতাশা পেরিয়ে বাংলাদেশ এবার সত্যিই পেরেছে বিজয় নিশান ছড়িয়ে দিতে, পাকিস্তান ও ক্রিকেট বিশ্বে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ২৭৪
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ২৬২
পাকিস্তান ২য় ইনিংস: ১৭২
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ১৮৫/৪ (লক্ষ্য ১৮৫, ৫৬ ওভারে)
ফলাফল: বাংলাদেশ ৬ উইকেটে জয়ী
সিরিজ ফল: বাংলাদেশ ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: লিটন কুমার দাস
ম্যান অব দ্য সিরিজ: মেহেদী হাসান মিরাজ