দুই মাস আগেও নিজের বিজয় সম্পর্কে দৃঢ়বিশ্বাসী ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি এতটাই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন যে ভূমিধস বিজয়ের কথা বলে বেড়াচ্ছিলেন। তবে তখন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে জো বাইডেনের অবস্থান ছিল দৃঢ়। কিন্তু বাইডেনের সরে যাওয়ার পর কমলা হ্যারিস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে আবির্ভূত হলে পরিস্থিতি বদলে যায়। হ্যারিস এখন শুধু ট্রাম্পের সঙ্গে ব্যবধান কমিয়েছেন তা-ই নয়, বেশির ভাগ জনমত জরিপে ট্রাম্পকে পেছনে ফেলেছেন।
রয়টার্সের সর্বশেষ জাতীয় জনমত জরিপ অনুযায়ী, হ্যারিস এখন ট্রাম্পের চেয়ে চার পয়েন্টে এগিয়ে আছেন (৪৫% বনাম ৪১%)। গুরুত্বপূর্ণ ‘ব্যাটলগ্রাউন্ড’ অঙ্গরাজ্যগুলোতেও কমলা হ্যারিস ট্রাম্পকে ছাড়িয়ে গেছেন। এমনকি ট্রাম্প-সমর্থক ফক্স নিউজের সাম্প্রতিক জরিপেও ‘সান বেল্ট’ অঙ্গরাজ্যের তিনটিতে কমলা এগিয়ে রয়েছেন। এই ফলাফলে ট্রাম্প ক্ষিপ্ত হয়েছেন এবং তাঁর প্রচার শিবির এটিকে ‘অতি কদর্য’ আখ্যা দিয়েছে।
এই অবস্থায়, ট্রাম্প কিছুটা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। তিনি কমলার নির্বাচনী সভাগুলোর বিশাল জনসমাগম মেনে নিতে পারছেন না এবং কোনো প্রমাণ ছাড়াই এসব সমাবেশের ছবিগুলোকে এআই দিয়ে তৈরি বলে দাবি করেছেন। এমনকি ডেট্রয়ট বিমানবন্দরে কমলাকে দেখার জন্য হাজারো মানুষের সমাবেশকে ‘মিথ্যা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন ট্রাম্প।
ট্রাম্পের সাম্প্রতিক কিছু মন্তব্য, যেমন ২০১৭ সালে তাঁর অভিষেকে মার্টিন লুথার কিংয়ের ‘মার্চ অন ওয়াশিংটন’ সভার তুলনায় বেশি মানুষের উপস্থিতি ছিল, তাঁর মানসিক স্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। তিনি সম্প্রতি একটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার গল্প বলেছেন, যা পরে সান ফ্রান্সিসকোর তৎকালীন মেয়র উইলি ব্রাউন দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়।
ট্রাম্পের চলমান আচরণ ও বক্তব্য তাঁর সমর্থকদের মধ্যেও বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। বিশেষত, কমলা হ্যারিসের গাত্রবর্ণ নিয়ে বিদ্রূপ এবং ট্রুথ সোশ্যালে কুৎসিত মন্তব্য করে ট্রাম্প নারী ভোটারদের মধ্যে নিজের সমর্থন হারাচ্ছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ট্রাম্পের উপদেষ্টারা তাঁকে বারবার বলেছেন জরুরি বিষয় যেমন অভিবাসন ও অর্থনীতি নিয়ে মনোযোগ দিতে, কিন্তু তা কোনো ফল বয়ে আনেনি। কমলা হ্যারিস ও তাঁর প্রচার শিবির ট্রাম্পের এই অস্বাভাবিক আচরণকে মজা হিসেবে দেখছেন, যা তাঁর পক্ষে ইতিবাচক ফল বয়ে আনতে পারে।