ঢাকা, ৩০ আগস্ট: একশ্রেণির মতলবী মানুষ সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করেছেন ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। তিনি বলেন, “সরকারকে বিব্রত করার জন্য এই শ্রেণির মানুষ মাঠে নেমেছে, এদেরকে প্রতিহত করতে হবে। উপাসনালয়ে যারা হামলা করে, তারা মানুষ নয়, তারা পশু। এদেরকে প্রচলিত আইনে কঠোর শাস্তির বিধান করা হবে।”
গতকাল শুক্রবার (৩০ আগস্ট) রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মেলাঙ্গণে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি এবং বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ আয়োজিত জন্মাষ্টমী উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন ধর্ম উপদেষ্টা।
ড. খালিদ হোসেন আরও বলেন, “আবহমানকাল থেকেই এদেশে অসাম্প্রদায়িক আবহ বিরাজমান। এটাকে কোনোক্রমেই নষ্ট করতে দেওয়া যাবে না। আমাদের দেশের নানা ধর্মের বৈচিত্র্য রয়েছে, এটি আমাদের ঐতিহ্য। এই ঐতিহ্যকে আমরা লালন করতে চাই, ধারণ করতে চাই এবং বিশ্ববাসীকে আমরা দেখিয়ে দিতে চাই।”
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশের সীমানার ভিতরে কোনো দেবোত্তর সম্পত্তি যদি কেউ দখল করে থাকে, তাদেরকে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সহায়তায় উচ্ছেদ করা হবে। এ ছাড়া দেবোত্তর সম্পত্তি নিয়ে কোনো মামলা চলমান থাকলে, সেটিও দ্রুত নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেওয়া হবে। মন্দিরের নিরাপত্তায় সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন এবং তদারকি ব্যবস্থা জোরদার করার পরামর্শ দেন তিনি।
ড. খালিদ হোসেন বলেন, “সুন্দর কথা বলা সহজ, কিন্তু সুন্দর কাজ করা কঠিন। সুন্দর কথাকে অবশ্যই কাজে পরিণত করতে হবে। আমরা সুন্দর কথা যেমন বলব, তেমনই সুন্দর কাজও করে যাব। আমরা একটি সুন্দর, শান্তিময়, সুখী ও সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়তে চাই। এক্ষেত্রে প্রত্যেকের সহযোগিতা প্রয়োজন।” তিনি মুক্তিযুদ্ধের মতো ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে সবাইকে দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন যুব ও ক্রীড়া এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। তিনি বলেন, “এদেশে আমরা-আপনারা বলতে কোনো কথা নেই। আমরা সবাই বাংলাদেশের জনগণ, এবং প্রত্যেক নাগরিকের সমান অধিকার আছে। আমরা সরকারের দায়িত্বে থাকাকালীন অবস্থায়, শেষ দিন পর্যন্ত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং আমাদের মধ্যকার ঐক্য রক্ষায় বদ্ধপরিকর।”
মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি শ্রী জয়ন্ত কুমার দেবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর, সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা, ইসকন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক চারু চন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী, রমনা ক্যাথলিক চার্চের ধর্মগুরু ফাদার এলবার্ট রোজারিও, এবং ঢাকা আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারের উপাধ্যক্ষ ভদন্ত বুদ্ধানন্দ মহাথের।