আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রবেশ করেছিলেন বেশ সাড়া জাগিয়ে, কিন্তু বিদায় নিলেন অনেকটা আড়ালে। ৩১ বছর বয়সে ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর পরও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা ক্রিকেট মহলে তেমন কোনো আলোচনা হয়নি তাঁকে নিয়ে। বারিন্দার স্রান, যিনি আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে মাত্র ছয়টি ওয়ানডে ও দুটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন, তিনি অনেকটা নিভৃতেই বিদায় নিলেন। তবে অভিষেকের সময় এই পেসারের প্রতি যে প্রত্যাশা ছিল, সেটির স্মৃতি এখনো অনেকে মনে করেন।
প্রশ্ন উঠতে পারে, মাত্র আটটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা স্রানের অভিষেক নিয়ে এত হইচই কেন হয়েছিল? এই গল্পের পেছনে আছে বাংলাদেশি পেসার মোস্তাফিজুর রহমানের প্রভাব। ২০১৫ সালে মোস্তাফিজ বাংলাদেশের মাটিতে ভারতকে চমকপ্রদভাবে হারানোর পর ভারতীয় ক্রিকেট মহল এমন একজন বোলার খুঁজতে থাকে, যিনি মোস্তাফিজের মতোই কার্যকর হতে পারেন। সেই অনুসন্ধানের ফলেই ২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে স্রানকে ভারতের দলে নেওয়া হয়। স্রান, যিনি পেশাদার ক্রিকেট শুরু করেছিলেন মাত্র ১৮ বছর বয়সে, তাঁকে ভারতের ‘মোস্তাফিজ’ হিসেবে দেখা হচ্ছিল।
স্রান, যিনি বাঁহাতি পেসার ছিলেন এবং কাটার ডেলিভারিতে দক্ষ ছিলেন, তাঁর আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারও শুরু হয়েছিল দারুণভাবে। অভিষেক ম্যাচেই তিনি আউট করেছিলেন অ্যারন ফিঞ্চ, ডেভিড ওয়ার্নার, এবং স্টিভ স্মিথকে। কিন্তু সেই সাফল্য খুব বেশিদূর এগোয়নি। শেষ পর্যন্ত তাঁর আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার থেমে যায় মাত্র ১৩ উইকেটে—যেখানে মোস্তাফিজ পেয়েছিলেন ৩ ম্যাচের একটি সিরিজেই ১৩ উইকেট।
স্রান এবং মোস্তাফিজ ২০১৬ সালে আইপিএল-এ সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে একসঙ্গে খেলেছিলেন। তবে আইপিএল-এও স্রানের ক্যারিয়ার খুব বেশি অগ্রসর হয়নি। যেখানে মোস্তাফিজ এখনো বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় বোলারদের একজন এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৩২৩টি উইকেট শিকার করেছেন, সেখানে স্রানের ক্যারিয়ার থেমে গেছে একরকম আড়ালেই।
মোস্তাফিজ যেখানে এখনো ক্রিকেটের আলোচনার কেন্দ্রে, সেখানে ‘ভারতের মোস্তাফিজ’ বারিন্দার স্রানের ক্যারিয়ার রয়ে গেল স্মৃতির পাতায়।