খেলাপি ঋণ বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের জন্য দীর্ঘদিন ধরে বিষফোঁড়ার মতো একটি সমস্যা। ধারণা করা হচ্ছে, দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বর্তমানে ৪ লাখ কোটি টাকার বেশি। তবে, সব তথ্য প্রকাশ্যে এলে এ পরিমাণ ৬ লাখ কোটিও ছাড়িয়ে যেতে পারে।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সংবাদ সম্মেলনে এ উদ্বেগজনক তথ্য তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা।
সংবাদ সম্মেলনে হুসনে আরা শিখা বলেন, “আগে খেলাপি ঋণের তথ্য লুকানো হতো। এখন সব তথ্য প্রকাশ্যে আনার চেষ্টা চলছে। ধারণা করা হচ্ছে, খেলাপি ঋণ ৪ লাখ কোটি টাকা বা তার বেশি। তবে, তদন্ত শেষে পুরো চিত্র সামনে এলে এটি ৬ লাখ কোটিও ছাড়াতে পারে।”
তিনি আরও জানান, “এই মুহূর্তে খেলাপি ঋণ কম দেখানোর মতো কোনো চিন্তা নেই। তদন্ত শেষ হলে খেলাপি কমানোর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ সম্পর্কে জানা যাবে।”
খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি সম্পর্কে হুসনে আরা শিখা বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংক আন্তর্জাতিক রুলস অনুসরণ করার চেষ্টা করছে। এর ফলে কিছু খেলাপি ঋণের তথ্য এখন প্রকাশ্যে আসছে। আগে যা লুকানো হতো।”
গত পাঁচ মাসে আর্থিক খাতের বিভিন্ন উদ্যোগের পরও পুরোপুরি স্থিতিশীলতা ফিরে আসেনি বলে জানান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র।
তিনি বলেন, “ভালো দিক হলো, এরইমধ্যে আর্থিক ভীতি কেটে গেছে। ব্যাংকিং খাতে বোর্ড পুনর্গঠন, টাস্কফোর্স গঠন, ডলার বাজার স্থিতিশীলতা এবং মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণসহ বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যদিও কিছু সুফল পাওয়া গেছে, তবে আরও অনেক কিছু করতে হবে।”
বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরানোর বিষয়ে হুসনে আরা শিখা জানান, “চলতি বছরের শেষ নাগাদ কোন ব্যাংকের মাধ্যমে কী পরিমাণ অর্থ কোন দেশে পাচার হয়েছে, সে বিষয়ে স্পষ্ট জানা যাবে। পাচারের অর্থ ফেরত আনা একটি সময় সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। নির্ধারিত সংস্থাগুলো এ বিষয়ে কাজ করছে, তবে নিরাপত্তার স্বার্থে সব তথ্য তারা আমাদের সঙ্গে শেয়ার করে না।”