ঢাকা: সংস্কার ও নির্বাচনের প্রস্তুতি একই সঙ্গে চলবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, “নির্বাচনের প্রস্তুতির দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের, আর সংস্কার কার্যক্রমে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ (কেআইবি)-তে শুরু হওয়া দুদিনব্যাপী জাতীয় সংলাপের উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সংলাপের মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন’।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “আমি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের যোদ্ধাদের। বিশেষ করে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ ছাত্রজনতা ও আহতদের অবদান জাতি কখনো ভুলবে না। তাদের প্রেরণাতেই আমরা রূপান্তরের পথে এগিয়ে যাচ্ছি।”
তিনি বলেন, “গণতান্ত্রিক ও নাগরিক সমতাভিত্তিক একটি রাষ্ট্র ব্যবস্থা গঠনের মাধ্যমে সব ধরনের বৈষম্য দূর করাই আমাদের লক্ষ্য।”
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “সংস্কার, ঐক্য ও নির্বাচন একে অপরের পরিপূরক। ঐক্যবিহীন সংস্কার কিংবা সংস্কারবিহীন নির্বাচন কোনোভাবেই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে পারবে না। তাই, আমাদের সবার উচিত এই তিনটি বিষয়ের প্রতি সমান গুরুত্ব দেওয়া।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের ছাত্রজনতা শিশুহত্যাকারী ও ঘাতকদের মোকাবিলা করেছে। মানবতার বিরুদ্ধে এমন অপরাধের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। গুম, খুন ও গণহত্যার বিচার জনগণের দাবি। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জাতি ঐক্যবদ্ধ।”
ড. ইউনূস জানান, সংস্কার প্রক্রিয়া সহজ করতে ১৫টি সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে। “এই কমিশনগুলো জানুয়ারি মাসে তাদের প্রতিবেদন দেবে। প্রতিটি কমিশনের দায়িত্ব হলো বিভিন্ন বিকল্প চিহ্নিত করে সুপারিশ করা। তবে এগুলো মেনে নেওয়া বাধ্যতামূলক নয়। জাতীয় ঐকমত্য গঠন কমিশনের মাধ্যমে এসব সুপারিশ চূড়ান্ত করা হবে,” বলেন তিনি।
সংস্কারে নাগরিকদের অংশগ্রহণের ওপর জোর দিয়ে ড. ইউনূস বলেন, “ভোটারদের পাশাপাশি ভবিষ্যৎ ভোটারদেরও সংস্কারের কাজে যুক্ত হতে হবে। আমাদের এই মহান দায়িত্ব আনন্দের সঙ্গে পালন করতে হবে।”