ঢাকা, বৃহস্পতিবার: সচিবালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় সম্প্রতি ঘটে যাওয়া অগ্নিকাণ্ডের পেছনের কারণ তদন্তের মাধ্যমেই জানা যাবে বলে মন্তব্য করেছেন সেনাবাহিনীর মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের কর্নেল স্টাফ কর্নেল ইন্তেখাব হায়দার খান।
আজ (বৃহস্পতিবার) ঢাকা সেনানিবাসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনীর কার্যক্রম সম্পর্কে জনগণকে ধারণা দিতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
কর্নেল ইন্তেখাব জানান, গত এক মাসে সেনাবাহিনী ২৮টি অবৈধ অস্ত্র ও ৪২৪ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে। একই সময়ে বিভিন্ন শিল্প কারখানায় ৬৭টি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি এবং আরও ৪৫টি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রেখেছে।
যৌথ বাহিনীর অভিযানে এক মাসে ২০০ মাদক কারবারিসহ ১৪০৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেনাবাহিনী আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য গত ২০ জুলাই থেকে মাঠে কাজ করছে এবং ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে সশস্ত্র বাহিনীর ক্যাপ্টেন ও তদূর্ধ্ব পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
সচিবালয়ের অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে কর্নেল ইন্তেখাব বলেন, “তদন্ত হলে পেছনের কারণটা জানা যাবে। তখন বোঝা যাবে, এটি দুর্ঘটনা নাকি পরিকল্পিত ঘটনা। সেনাবাহিনী আগুন লাগার সময় ফায়ার সার্ভিসকে সর্বাত্মক সহায়তা করেছে।”
দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে কর্নেল ইন্তেখাব জানান, পরিসংখ্যানগতভাবে পরিস্থিতি অবনতি হয়নি। তবে বিভিন্ন ধরনের ঘটনা ঘটছে, যা সেনাবাহিনীর নজরদারিতে রয়েছে।
তিনি বলেন, “আমরা দুই ধরনের অপারেশন পরিচালনা করি। একটি টার্গেটেড অপারেশন এবং অন্যটি তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা। গত এক মাসে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে অপরাধ নির্মূল সম্ভব না হলেও সহনশীল পর্যায়ে রাখার চেষ্টা করছি।”
মিয়ানমারের চলমান পরিস্থিতির প্রভাব সম্পর্কে জানতে চাইলে কর্নেল ইন্তেখাব বলেন, “দেশের সার্বভৌমত্বে আপাতত কোনো ঝুঁকি নেই। কক্সবাজার এলাকায় সেনাবাহিনী ও অন্যান্য বাহিনী সমন্বিতভাবে কাজ করছে। নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ নিয়ন্ত্রণেও পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।”
সেনাবাহিনী কতদিন মোতায়েন থাকবে, এ প্রশ্নে তিনি বলেন, “এটি সরকারের সিদ্ধান্ত। সরকার প্রয়োজন বুঝে সেনা প্রত্যাহার করবে।”
তিনি আরও বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে কাজ করা সহজ নয়। তবে সেনাবাহিনী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে চাপ মোকাবিলায় সক্ষম। আমরা সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছি।”
বান্দরবানের লামায় অগ্নিকাণ্ড প্রসঙ্গে তিনি জানান, এটি জমি সংক্রান্ত পুরোনো বিরোধের কারণে ঘটতে পারে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চাঁদাবাজি ইস্যুতে তিনি বলেন, “সরকারের সমন্বিত তালিকা অনুযায়ী কাজ চলছে। আলাদাভাবে তালিকা করার কোনো পরিকল্পনা নেই।”
সেনাসদর থেকে জানানো হয়, দেশের সার্বিক নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে সেনাবাহিনী সবসময় তৎপর।