চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে সংঘটিত ৭ খুনের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত আকাশ মণ্ডল ওরফে ইরফানকে পুলিশ রিমান্ডে নিয়েছে। তার প্রকৃত নাম আকাশ মণ্ডল হলেও, ইরফান পরিচয়ে তিনি কার্গো জাহাজ এমভি আল বাখেরায় খালাসির চাকরি করছিলেন। বাগেরহাটের যুবক আকাশ কী কারণে তার পরিচয় গোপন করেছিলেন, তা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে রহস্য।
গত মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) গভীর রাতে র্যাব-১১-এর বিশেষ দল বাগেরহাটের চিতলমারি এলাকা থেকে আকাশ মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আত্মগোপনে ছিলেন। এরপর বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) চাঁদপুরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাকে ৭ দিনের রিমান্ডে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বর্তমানে তিনি চাঁদপুর সদর মডেল থানার হাজতখানায় আছেন এবং নৌ পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা মো. কালাম খান তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।
কার্গোজাহাজ এমভি আল বাখেরার মালিক মাহবুব মোর্শেদ ডাবলু জানান, আকাশ মণ্ডল ইরফান নামে তাদের জাহাজে খালাসির পদে চাকরি নেন। “সে তার প্রকৃত নাম গোপন করেছিল কেন, তা আমরা এখনো জানি না,” বলেন তিনি।
গতকাল আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থন করে আকাশ মণ্ডল ওরফে ইরফান বলেন, “মানুষ ভুল করে। আমিও ভুল করেছি।” তবে তার এই ভুল যে ভয়াবহ, তা প্রকাশ পায় আদালতে দেওয়া তার স্বীকারোক্তিতে। আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর চৌধুরী ইয়াসিন ইকরাম জানান, ইরফান স্বীকার করেছেন, তিনি ধারালো অস্ত্র দিয়ে ৭ জনকে হত্যা করেছেন।
নিহতরা হলেন:
ফরিদপুরের গোলাম কিবরিয়া (৬৫)
শেখ সবুজ (২৭)
নড়াইলের মো. সালাহউদ্দিন (৪০)
আমিনুর মুন্সি (৪১)
মাগুরার সজিবুল ইসলাম (২৯)
কিশোর মাজেদুল (১৬)
মুন্সিগঞ্জের রানা (২৮)
চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে আবাসিক মেডিকেল অফিসার হাসিবুল আহসান জানান, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মাথা ও মুখমণ্ডলে গুরুতর আঘাত করেই তাদের হত্যা করা হয়।
এমভি আল বাখেরার মালিকপক্ষের দাবি, আকাশ মণ্ডলকে চাকরির বেতন ও সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হয়নি। তবে আকাশের এই অভিযোগ পুরোপুরি বানোয়াট বলে জানিয়েছেন তারা। পুলিশের মতে, আকাশের পরিচয় গোপনের মূল উদ্দেশ্য এবং তার জাহাজে ঢোকার প্রকৃত কারণ উদঘাটন এখন তদন্তের মূল চ্যালেঞ্জ।