ঢাকা, ২১ ডিসেম্বর: জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশের প্রতিবাদে ২৫টি ক্যাডারের সমন্বয়ে গঠিত ‘আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ’ একাধিক কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। পরিষদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগামী ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত কলমবিরতি, মানববন্ধন ও সমাবেশসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হবে।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) ঢাকার সেগুনবাগিচার পূর্ত ভবনে পরিষদের এক মতবিনিময় সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন পরিষদের সমন্বয়ক ড. মুহম্মদ মফিজুর রহমান। এতে ২৫টি ক্যাডারের সভাপতি, সেক্রেটারি এবং সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
পরিষদের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়,
২৩ ডিসেম্বর (সোমবার): প্রতিটি ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন কেন্দ্রীয়ভাবে বিবৃতি দেবে।
২৪ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার): সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এক ঘণ্টার কলমবিরতি।
২৬ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার): নিজ নিজ কর্মস্থলের সামনে মানববন্ধন (সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত)।
৪ জানুয়ারি (শনিবার): ঢাকায় কেন্দ্রীয় সমাবেশ এবং পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা।
সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, যেসব বিভাগে এখনো সমাবেশ হয়নি, সেসব জায়গায় দ্রুত বিভাগীয় সমাবেশ আয়োজন করা হবে।
সভায় বক্তারা জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশে উপসচিব পুলে একটি নির্দিষ্ট ক্যাডারের জন্য ৫০ শতাংশ কোটা রাখার প্রস্তাবের সমালোচনা করেন। তারা বলেন, “এ ধরনের বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত সিভিল সার্ভিসের অন্য ২৫টি ক্যাডারের সদস্যদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়ার পরিবর্তে কোটা পদ্ধতি চালু রেখে প্রশাসন ক্যাডার নিজেদের সুবিধা নিশ্চিত করছে।”
তারা অভিযোগ করেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর সার্ভিস অ্যাক্ট বাতিল করে ২০২৪ সালের নির্বাচনের পরে উপসচিব পদের কোটা নিজেদের তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করেছে প্রশাসন ক্যাডার। এটি মেধাভিত্তিক জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠনে বাধা সৃষ্টি করছে।
বক্তারা আরও বলেন, “একটি ক্যাডারের নিয়ন্ত্রণে থাকা আমলাতান্ত্রিক সিন্ডিকেট, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা রাষ্ট্রের বিভিন্ন সেক্টরকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে দেশের মানুষ প্রকৃত সেবাবঞ্চিত হচ্ছে এবং জনবান্ধব সরকারের বদলে স্বৈরাচারী শাসন প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে।”
বৈষম্য নিরসনে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে এই সংকট সমাধানে কাজ করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে।