দেশের শোবিজ অঙ্গনে মাদক সংশ্লেষের অভিযোগে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন জনপ্রিয় নাট্যাভিনেত্রী ও মডেল সাফা কবির, মুমতাহিনা চৌধুরী টয়া, তানজিন তিশা এবং সংগীতশিল্পী সুনিধি নায়েক। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (নারকোটিক্স) অনুসন্ধানে তাদের বিরুদ্ধে মাদক সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
সম্প্রতি রাজধানীর বিমানবন্দরে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র অরিন্দম রায় দীপকে গ্রেফতারের পর মাদক সংশ্লেষের এ তথ্য বেরিয়ে আসে। দীপের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ মাদক উদ্ধারের পাশাপাশি তার মোবাইল ফোনের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটিংয়ে এই অভিনেত্রীদের সঙ্গে মাদক আদান-প্রদানের রেকর্ড পাওয়া যায়।
তদন্তসংশ্লিষ্টরা জানান, দীপের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সাফা কবির ও টয়ার নামের রেজিস্ট্রেশন করা নম্বর এবং তানজিন তিশার মায়ের নামে রেজিস্টার্ড নম্বর থেকে মাদকের অর্ডার দেওয়া হয়েছিল। এমনকি সাংকেতিক ভাষায় করা চ্যাটিং রেকর্ডগুলোও তদন্তকারীদের হাতে এসেছে।
একটি চ্যাটিং রেকর্ডে দেখা যায়, ২৩ এপ্রিল সাফা কবির ‘ই’ নামে সাংকেতিক ভাষায় এমডিএমএ অর্ডার দেন। একইভাবে, টয়া ৫ সেপ্টেম্বর একটি প্রাইভেট পার্টির জন্য মাদক অর্ডার করেন। এছাড়া সংগীতশিল্পী সুনিধি নায়েক ব্র্যান্ড উল্লেখ করে এমডিএমএ ও এলএসডির অর্ডার দেন।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এক সহকারী পরিচালক গণমাধ্যমকে জানান, দীপের মোবাইল ফোনের কললিস্ট ও হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটিং বিশ্লেষণে শীর্ষস্থানীয় অভিনেত্রী ও মডেলদের মাদক সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে এবং সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তদন্তে জানা গেছে, রাজধানীর গুলশান ও বনানীকেন্দ্রিক ধনী পরিবারের তরুণ-তরুণীদের মধ্যে এমডিএমএ, এলএসডি এবং কুশের মতো মাদক ব্যবহার বেড়েছে। এগুলো স্ন্যাপচ্যাট, মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়।
নারকোটিক্সের প্রধান রাসায়নিক পরীক্ষক দুলাল কৃষ্ণ সাহা জানান, এমডিএমএ একটি কৃত্রিম মাদক যা ‘সুখানুভূতির মাদক’ নামে পরিচিত। এটি মস্তিষ্কে এমন এক অনুভূতি সৃষ্টি করে যা সময় ও বাস্তব উপলব্ধির বিচ্যুতি ঘটায়
শোবিজ অঙ্গনের তারকাদের এমন কর্মকাণ্ডে সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। কেউ কেউ দাবি করছেন, এই ঘটনা পুরো শোবিজ জগতের সুনাম ক্ষুণ্ন করবে।
নারকোটিক্সের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তদন্ত শেষে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এরই মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।