আবহাওয়ার প্রভাব কমলেও চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম, ফুলের দাম পেয়ে লাভবান চাষিরা
প্রতিবেদন:
যশোর, ১৮ ডিসেম্বর: বিজয় দিবস উপলক্ষে তিন দিনে দেশের ফুলের রাজধানী খ্যাত যশোরের গদখালীতে প্রায় তিন কোটি টাকার ফুল বিক্রি হয়েছে। এবার সব ধরনের ফুলের দাম ভালো পাওয়ায় চাষিরা বেশ খুশি। তবে আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় ফুলের উৎপাদন কমেছে, ফলে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় বেড়েছে ফুলের দাম।
যশোর শহর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার পশ্চিমে যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের পাশে অবস্থিত গদখালী বাজার। প্রতিদিন ভোর থেকেই চাষি, পাইকার এবং শ্রমিকদের হাঁকডাকে সরগরম হয়ে ওঠে এই এলাকা। এখানে স্থানীয় কৃষকেরা গোলাপ, রজনীগন্ধা, গাঁধা, জারবেরা, চন্দ্রমল্লিকা সহ বিভিন্ন ধরনের বাহারি ফুল নিয়ে আসেন। পাইকারদের হাত ধরে সেসব ফুল ছড়িয়ে পড়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
একজন ফুল বিক্রেতা জানান, এবারের বিজয় দিবসে ফুলের চাহিদা বেশি ছিল। গাঁধা ফুল প্রতি হাজার ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায়, রজনীগন্ধা ১২০০ টাকায় এবং গোলাপ ১০০০ থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তিনি বলেন, “বাজারে ফুলের সরবরাহ কম থাকায় দাম ভালো পাওয়া গেছে।”
অন্য এক ফুল বিক্রেতা বলেন, “রজনীগন্ধা ও গাঁধা ফুলের চাহিদা সবচেয়ে বেশি ছিল। আমরা গদখালী থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ফুল পাঠিয়েছি।”
এবারের আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় ফুলের উৎপাদন কম হয়েছে বলে জানান পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় বিজয় দিবসে ফুলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে আগের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার আশায় চাষিরা অনেকটাই আশাবাদী।
একজন ফুল চাষি বলেন, “দুইবার ফসলের ক্ষতি হয়েছিল, ফলে নতুন করে ফুল চাষে দেরি হয়েছে। তবে এবার বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় ক্ষতির কিছুটা পুষিয়ে নিতে পারব।”
আরেক চাষি বলেন, “বাজারে এমন চাঙ্গাভাব থাকলে আমরা আগের লোকসান কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে পারব।”
বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রহিম বলেন, “বৃষ্টির কারণে ফুলচাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তবে এবার ফুলের বাজার ভালো থাকায় চাষিরা লাভবান হবে বলে আশা করছি।”
কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, যশোরের প্রায় দেড় হাজার হেক্টর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে ১৫ প্রজাতির ফুল চাষ করা হয়। গদখালীর ফুল চাষিদের এই শ্রম ও উৎপাদন দেশের ফুলের বাজারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।