ঢাকা, ১১ ডিসেম্বর:
বিদ্যুৎ চুক্তি নিয়ে আলোচনায় পানি সম্পদ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ভারতের সঙ্গে বিদ্যুৎ চুক্তিগুলো বাতিল করা সহজ নয় এবং তা করতে গেলে বিশাল ব্যয় বহন করতে হবে। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের সঙ্গে আদানি গ্রুপসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ চুক্তিগুলো অসম। এসব চুক্তি পর্যালোচনা করার পাশাপাশি জ্বালানি খাতে আরও কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারে বেসরকারি শিল্পগুলোকে উৎসাহিত করতে হবে।”
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান আরও উল্লেখ করেন, “দেশের বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণে কৃষি এবং অটোরিকশা চালনায় সোলার সিস্টেম ব্যবহার করা সম্ভব কিনা তা খতিয়ে দেখা উচিত। অসম চুক্তিগুলোর জন্য অস্বাভাবিক অর্থনৈতিক চাপ তৈরি হয়েছে।”
এ বিষয়ে জ্বালানিবিশেষজ্ঞ এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ড. ম তামিম বলেন, “বর্তমানে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৬ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট। ২০৩০ সালের মধ্যে এটি ৩০ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত হবে, যার মধ্যে মাত্র ১ হাজার মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে আসবে। বাকি অংশ জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল।”
ড. তামিম আরও বলেন, “বর্তমান বিদ্যুৎ চাহিদা গ্রীষ্মকালে সর্বোচ্চ ১৭ হাজার মেগাওয়াটে পৌঁছায়। কিন্তু অতিরিক্ত ক্যাপাসিটি পেমেন্ট দিতে হয়। ভবিষ্যতে বিদ্যুৎ খাত বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেমের উন্নয়ন জরুরি।”
তিনি আরও বলেন, “জেলাভিত্তিক বিদ্যুৎ চাহিদার ভিত্তিতে নতুন পরিকল্পনা করা উচিত। বিদ্যুৎ খাতে সাশ্রয়ের জন্য ফ্যান এবং এসি ব্যবহারে সচেতনতা বাড়াতে হবে। রাজনীতিবিদদের এ বিষয়ে আগ্রহী হওয়া জরুরি।”
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বিদ্যুৎ খাতে আগামী পাঁচ থেকে ছয় বছরের মধ্যে বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটবে। এ জন্য এখন থেকেই সুপরিকল্পিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।