ঢাকা, ৪ ডিসেম্বর:
সরকার আগামী জুনের মধ্যে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ এবং অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে প্রায় ৬০০ কোটি ডলার তহবিল পাওয়ার আশায় রয়েছে। এ বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ওয়াশিংটনে উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। গতকাল (৩ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে আইএমএফের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ জয়েন্দু দে’র নেতৃত্বে একটি মিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ তথ্য জানান।
বর্তমানে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্যাকেজের আওতায় চতুর্থ কিস্তি ছাড়ের শর্ত পূরণের অগ্রগতি মূল্যায়নে আইএমএফের তৃতীয় পর্যালোচনা মিশন ঢাকায় এসেছে। এ প্রসঙ্গে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, “এই সফরে রাজস্ব ঘাটতি, প্রবৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি এবং রাজস্ব খাতের উন্নয়নমূলক কার্যক্রমে গুরুত্বারোপ করা হবে। ব্যাংকিং খাতের সংস্কার, খেলাপি ঋণ এবং আমানতকারীদের চ্যালেঞ্জগুলোতেও নজর দেওয়া হবে।”
তিনি আশা প্রকাশ করেন, চলমান সফরের প্রেক্ষিতে ১১১ কোটি ডলারের কিস্তি ছাড়ের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ ও ওপেক তহবিলের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। এডিবি এবং ওপেক তহবিল থেকেও অর্থায়নের প্রত্যাশা রয়েছে।” তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, প্রতিশ্রুতি দ্রুত আসলেও অর্থ সরবরাহে কিছুটা বিলম্ব হতে পারে।
আইএমএফ মিশন তাদের পরবর্তী কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আগামী বছরের মার্চে আবারও বাংলাদেশ সফর করতে পারে বলে তিনি জানান।
ড. সালেহউদ্দিন জোর দিয়ে বলেন, “অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার দিক থেকে উন্নতি হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার বর্তমানে তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল।”
তিনি আরও জানান, কিছু ব্যাংক তারল্য সংকটে থাকলেও ইসলামী ব্যাংকের মতো বড় প্রতিষ্ঠান ঘুরে দাঁড়াচ্ছে এবং অন্যান্য ব্যাংক ধীরে ধীরে স্থিতিশীল হচ্ছে।
অর্থ উপদেষ্টা বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং বলেন, “এখনই সময় বিদেশি দাতাদের অবদান রাখতে উৎসাহিত করার এবং বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি করার।”
অভ্যন্তরীণ রেমিট্যান্স ও রপ্তানি প্রবৃদ্ধি শক্তিশালী থাকলেও আমদানি বিশেষ করে উৎপাদন উপকরণে কিছুটা কমতি দেখা গেছে। ড. সালেহউদ্দিন বলেন, “এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সম্ভাব্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।”
ব্যাংকিং ও রাজস্ব খাতের সংস্কারের জন্য সরকার ইতোমধ্যে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে। এ বিষয়ে বৈদেশিক অর্থায়নও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
চলমান ঋণ প্যাকেজ নিয়ে আলোচনা শেষে বাড়তি অর্থায়নের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে বলেও জানান তিনি।