ঢাকা: আন্তর্জাতিক সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনসাসনেস (ইসকন) নিষিদ্ধের দাবি এবং চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের নির্মম হত্যার প্রতিবাদে আজ শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) জুমার নামাজের পর রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগর।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমিয়া আরাবিয়ায় আয়োজিত বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয় সংগঠনটি। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরের সভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব।
বৈঠকে হেফাজতের নেতারা দাবি করেন, একটি মহল সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ব্যবহার করে দেশের স্থিতিশীলতা নষ্টের ষড়যন্ত্র করছে। নেতাদের ভাষ্য, “ইসকনের কর্মকাণ্ড দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। সম্প্রতি চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনাও এরই অংশ। এটি গৃহযুদ্ধ বাধানোর অপপ্রয়াস ছাড়া আর কিছু নয়।”
বৈঠক থেকে জুমার নামাজের পর বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয়। একইসঙ্গে দেশের জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তারা বলেন, “ফ্যাসিবাদী শাসকগোষ্ঠী এবং তাদের বিদেশি প্রভুরা ধর্মীয় উসকানির মাধ্যমে জাতিকে বিভ্রান্ত করার চক্রান্ত করছে।”
গত মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) চট্টগ্রাম আদালতে হাজিরা দিতে গিয়ে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ নৃশংসভাবে নিহত হন। এর একদিন আগে (২৫ নভেম্বর) শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেফতার করেছিল ডিবি পুলিশ।
চিন্ময় কৃষ্ণকে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হলে তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। আদালত প্রাঙ্গণ থেকে কারাগারে নেওয়ার পথে তার অনুসারীরা প্রিজন ভ্যান আটকে দেয়। এসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে চিন্ময়ের অনুসারীদের সংঘর্ষে তরুণ আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ নিহত হন।
আইনজীবী হত্যার ঘটনায় ইতোমধ্যেই দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রতিবাদ চলছে। এসব বিক্ষোভ থেকে ইসকনকে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ করার জোর দাবি উঠেছে। হেফাজতে ইসলাম বলছে, “ইসকন নিষিদ্ধ না করলে দেশে আরও বড় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।”
হেফাজতের ডাকা আজকের বিক্ষোভ সমাবেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রশাসন বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করেছে।