সশস্ত্র বাহিনী দিবসে দীর্ঘ এক যুগ পর সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া
বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া প্রায় এক যুগ পর সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে সশস্ত্র বাহিনীর আমন্ত্রণে তিনি এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন। তার এই উপস্থিতি দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেন বিএনপির উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। তারা সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন এবং তার সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ আলাপ করেন।
এছাড়া অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে খালেদা জিয়ার কুশল বিনিময় হয়। প্রধান উপদেষ্টা তার বক্তব্যে বলেন,
“শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া এখানে এসেছেন। এক যুগ তিনি আসার সুযোগ পাননি। আমরা গর্বিত এই সুযোগ দিতে পেরে। দীর্ঘদিনের অসুস্থতা সত্ত্বেও বিশেষ দিনে সবার সঙ্গে শরিক হওয়ার জন্য আপনাকে আবারও ধন্যবাদ। আপনার আশু রোগমুক্তি কামনা করছি।”
বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে সেনাকুঞ্জের উদ্দেশে রওনা হন খালেদা জিয়া। বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে তিনি সেনাকুঞ্জে পৌঁছান।
প্রসঙ্গত, খালেদা জিয়া সবশেষ ২০১২ সালে সশস্ত্র বাহিনীর এই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। এর আগে ২০১০ সালে তাকে সেনানিবাসের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা হয়, যা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছিল।
খালেদা জিয়া ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে কারাগারে যান। পরে ২০২০ সালে করোনা মহামারির সময় নির্বাহী আদেশে মুক্তি পেলেও তিনি আর কোনো জনসম্মুখে অনুষ্ঠান বা সমাবেশে যোগ দেননি। প্রায় ছয় বছর পর এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করলেন তিনি, যা তার রাজনীতিতে সক্রিয়তার বার্তা দিচ্ছে বলে অনেকে মনে করছেন।
সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণ শুধু একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং এটি দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত বহন করে। তার দীর্ঘ বিরতির পর এই উপস্থিতি রাজনৈতিক মহলে নানা গুঞ্জন তৈরি করেছে।
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এবং তার রাজনীতিতে সক্রিয়তা নিয়ে সমর্থক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মাঝে নানা আলোচনা চলছে। তার এই উপস্থিতি বিএনপি সমর্থকদের মনোবলকে আরও উজ্জীবিত করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
দীর্ঘ এক যুগ পর খালেদা জিয়ার সেনাকুঞ্জে উপস্থিতি তার রাজনৈতিক জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের সূচনা হতে পারে। তার শারীরিক অবস্থা এবং ভবিষ্যৎ কার্যক্রমের দিকে সবার নজর থাকবে। সশস্ত্র বাহিনী দিবসে তার এই অংশগ্রহণ দেশের রাজনীতিতে নতুন গতি আনতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।