বঙ্গোপসাগরের নাফ নদ মোহনায় টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে চলাচলকারী দুটি ট্রলারসহ ছয় বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন আরাকান আর্মি (এএ)। সোমবার বিকালে ইট, বালি ও সিমেন্টবোঝাই ট্রলার দুটি সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে রওনা হয়, কিন্তু তারা আর ফিরতে পারেনি।
ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রশিদ নিশ্চিত করেন যে, মঙ্গলবার রাতে নাফ নদ পেরিয়ে সেন্টমার্টিনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময় ট্রলারগুলো অপহৃত হয়। শাহপরীর দ্বীপে জোয়ার-ভাটার কারণে ট্রলার দুটি সোমবার রাতে সেখানেই অবস্থান নেয়। বুধবার পর্যন্ত সেন্টমার্টিনে না পৌঁছানোয়, মাঝিদের পরিবারে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দা নুর আলম জানান, “টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যাওয়ার পথে দুটি ট্রলার ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এতে ৬ জন মাঝি-মাল্লা ছিল। এ ঘটনার পর থেকে তাদের পরিবারের সদস্যরা ভীষণ আতঙ্কিত।”
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, “মালামালবাহী দুটি ট্রলারসহ ৬ জন নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি শুনেছি, তবে কারা এই অপহরণের পেছনে রয়েছে, তা এখনো নিশ্চিত নই।”
অন্যদিকে, টেকনাফ-২ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল মহিউদ্দীন আহমেদ জানান, “এ বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পাইনি। তবে ঘটনার তদন্ত চলছে।”
সম্প্রতি আরাকান আর্মির মাধ্যমে নাফ নদ থেকে একাধিকবার জেলেদের অপহরণ করা হয়েছে। ৭ নভেম্বর আরাকান আর্মি কর্তৃক অপহৃত ২০ বাংলাদেশি জেলেকে বিজিবির সহায়তায় ফেরত আনা হয়েছিল। সাম্প্রতিক এই অপহরণের ঘটনা নতুন করে আতঙ্কের জন্ম দিয়েছে।
এই ধরনের ক্রমবর্ধমান অপহরণের ঘটনার প্রেক্ষিতে স্থানীয় মাঝি-মাল্লা এবং তাদের পরিবার নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নতির দাবি জানিয়েছেন। ট্রলার মালিক সমিতির পক্ষ থেকে নাফ নদ এবং বঙ্গোপসাগরের উপকূলীয় এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
টেকনাফের নৌরুটে নিরাপত্তার ঘাটতি ও ক্রমবর্ধমান অপহরণ পরিস্থিতি সামাল দিতে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবি।