ঢাকা, ২৯ অক্টোবর: সম্প্রতি ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগসহ মোট ১১টি রাজনৈতিক দলকে রাজনীতির বাইরে রাখতে একটি রিট দায়ের করা হয়। তবে মঙ্গলবার সকালে এই রিটটি আর চালানো হবে না বলে আদালতে জানিয়েছে আবেদনকারীদের আইনজীবী। এ সিদ্ধান্তের ফলে হাইকোর্ট রিটটি তার কার্যতালিকা থেকে বাদ দেয়।
সকালে বিচারপতি ফাতেমা নজীবের আদালতে উপস্থিত হয়ে আবেদনকারীদের পক্ষে অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম রিটটি আর চালানোর ইচ্ছা নেই বলে জানান। গতকাল ২৮ অক্টোবর এ রিটটি দায়ের করা হয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলম ও হাসিবুল ইসলামের পক্ষ থেকে। এই রিটের মাধ্যমে তারা ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনকে অবৈধ ঘোষণা করার আবেদনও করেন।
আবেদনকারীদের পক্ষ থেকে উল্লেখ করা হয়, গত কয়েক বছর ধরে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বেশ কিছু পরিবর্তন এসেছে। তবে তারা মনে করেন, আওয়ামী লীগসহ আরও ১০টি রাজনৈতিক দল ক্ষমতাচ্যুত হলেও প্রকৃত রাজনৈতিক স্বচ্ছতা ও গণতান্ত্রিক নীতি প্রতিষ্ঠায় তারা বাধা তৈরি করছে। এ কারণেই এসব দলকে রাজনীতির বাইরে রাখার আবেদন জানানো হয়েছিল।
এই রিটে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ছাড়া আরও ১০টি রাজনৈতিক দলকে রাজনীতির বাইরে রাখার আবেদন করা হয়েছিল। এই দলগুলো হলো:
জাতীয় পার্টি
জাসদ
জাতীয় পার্টি (জেপি)
তরিকত ফেডারেশন
গণতন্ত্রী পার্টি
কমিউনিস্ট পার্টি অব বাংলাদেশ
বিকল্পধারা
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)
বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল (এম-এল)
বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)
আবেদনকারীদের আইনজীবী জানান, তাদের মূল লক্ষ্য ছিল গণতন্ত্রের পথে বাধাস্বরূপ রাজনৈতিক দলগুলোকে চ্যালেঞ্জ করা। তবে বিভিন্ন আইনগত ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই রিট চালানো সম্ভব নয় বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিচারপতি ফাতেমা নজীবের আদালতে রিটটি উপস্থাপিত হলে তিনি রিটটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দেন। তিনি বলেন, যেহেতু আবেদনকারীরা রিটটি চালাতে চান না, তাই এটি তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার যথাযথ কারণ রয়েছে।
এ রিটের আবেদনের মাধ্যমে ছাত্র-জনতার দাবি-দাওয়া এবং রাজনৈতিক প্রভাবের বিষয়টি আবারো সামনে চলে এসেছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করেন, এই আন্দোলন মূলত বর্তমান রাজনৈতিক ব্যবস্থার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে ভূমিকা পালন করছে।
আদালতের এই সিদ্ধান্তে আওয়ামী লীগসহ উল্লেখিত দলগুলোর বিরুদ্ধে রিটটি আর চলবে না, তবে ছাত্র-জনতার আন্দোলন থেকে উঠে আসা দাবিগুলো নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।