বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বিপ্লব: দক্ষিণ কোরিয়ার অধ্যাপকের “শিট কয়েন” টয়লেট!
সিউল, দক্ষিণ কোরিয়া – বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় এক অভিনব উদ্যোগে, দক্ষিণ কোরিয়ার অধ্যাপক Cho Jae-Won এমন একটি টয়লেট আবিষ্কার করেছেন যা মানব বর্জ্যকে শক্তিতে রূপান্তর করে এবং ব্যবহারকারীদের একটি অভিনব ডিজিটাল মুদ্রায় পুরস্কৃত করে। “শিট কয়েন” নামের এই টোকেন ব্যবহারকারীদের দৈনন্দিন টয়লেট ব্যবহারের জন্য দেয়া হয়, যা একটি উদ্ভাবনী ধারণার অংশ হিসেবে টেকসই উন্নয়নকে উৎসাহিত করছে।
অধ্যাপক Cho Jae-Won-এর “বিভাই” নামে পরিচিত এই টয়লেট সিস্টেমটি দৈনিক ৫০০ গ্রাম মানব বর্জ্যকে ৫০ লিটার মিথেন গ্যাসে রূপান্তরিত করতে সক্ষম। এর ফলে ০.৫ কিলোওয়াট ঘণ্টা বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়, যা রান্না, লাইটিং, এমনকি ছোটখাটো ইলেকট্রনিক যন্ত্রে ব্যবহার করা যেতে পারে। এই উদ্ভাবন শুধু শক্তি উৎপাদনই করছে না, বরং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার একটি টেকসই এবং পরিবেশবান্ধব সমাধান প্রদান করছে।
কীভাবে কাজ করে এই টয়লেট?
এই টয়লেটটি অ্যানারোবিক ডাইজেশন নামে একটি প্রক্রিয়া ব্যবহার করে, যেখানে অক্সিজেন ছাড়া অণুজীব জৈব বর্জ্যকে ভেঙে মিথেন গ্যাস উৎপন্ন করে। এরপর এই গ্যাস জীবাশ্ম জ্বালানির বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যা গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমাতে সহায়তা করে এবং পরিবেশ দূষণ হ্রাস করে।
বর্জ্য ব্যবহারে ডিজিটাল মুদ্রায় পুরস্কার
টয়লেটটি ব্যবহারকারীকে “শিট কয়েন” নামে একটি বিশেষ ডিজিটাল মুদ্রা প্রদান করে। ব্যবহারকারীরা এই মুদ্রা দিয়ে ক্যাম্পাসে ক্যাফেটেরিয়া, বইয়ের দোকান, এমনকি কিছু নির্দিষ্ট স্টোরেও কেনাকাটা করতে পারে। এর ফলে তারা বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে উৎসাহিত করার পাশাপাশি পরিবেশ সংরক্ষণেও অবদান রাখতে পারে।
পরিবেশবান্ধব সমাধানের দিকে অগ্রসর
মানব বর্জ্যকে শক্তিতে রূপান্তরিত করে ল্যান্ডফিলের উপর নির্ভরতা কমিয়ে পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা করা সম্ভব। এ ধরনের উদ্ভাবন পরিবেশের প্রতি মানুষের দায়িত্বশীলতার ধারণাকে পুনঃব্যক্ত করে।
শিক্ষামূলক উদ্যোগ
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পরীক্ষামূলকভাবে এই টয়লেট ব্যবহার করা হচ্ছে, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং টেকসই উন্নয়নের ধারণা ছড়িয়ে দিচ্ছে।
অধ্যাপক Cho Jae-Won-এর এই উদ্যোগটি শুধু দক্ষিণ কোরিয়াতেই নয়, বরং সারা বিশ্বে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং নবায়নযোগ্য শক্তির একটি অনুপ্রেরণামূলক উদাহরণ হয়ে উঠেছে।