ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হল শাখার সভাপতি খাদিজা আক্তার ঊর্মি এবং সূর্যসেন হল শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মোয়াজ্জেম এইচ রাকিব সরকারকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। রোববার (২৭ অক্টোবর) রাতে ঢাকা মহানগর পুলিশের একটি বিশেষ অভিযানে তাদের আটক করা হয়। এজাহারভুক্ত আসামি হিসেবে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়, যা নিয়ে শিক্ষার্থী মহলে বেশ উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সহিংস হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ছাত্রলীগের শামসুন্নাহার হল শাখার সভাপতি খাদিজা আক্তার ঊর্মি এবং সূর্যসেন হল শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মোয়াজ্জেম এইচ রাকিব সরকারকে আটক করেছে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানিয়েছেন, অভিযুক্তরা গত সপ্তাহে শাহবাগ থানায় দায়ের করা এক মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কর্মসূচিতে ঢাবির ছাত্রছাত্রীদের ওপর হামলার ঘটনায় সাধারণ শিক্ষার্থী মহলে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এ হামলার ঘটনায় ইতিমধ্যে একাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন এবং তারা বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের দাবি, ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে এ ধরণের সহিংসতা কোনোভাবেই কাম্য নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা এই গ্রেপ্তারের বিষয়ে প্রশাসনের সঠিক পদক্ষেপের প্রশংসা করছেন এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে আরও কঠোর নজরদারি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানাচ্ছেন।
গত সপ্তাহে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে কিছু শিক্ষার্থীর ওপর হঠাৎ হামলা চালানো হয়। এতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েন এবং অনেকেই আহত হন। হামলায় জড়িত সন্দেহে শাহবাগ থানায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তারকৃত দুই শিক্ষার্থীকে এজাহারভুক্ত করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, এই সহিংসতার পেছনে তাদের মদদ ছিল এবং তারা হামলায় সরাসরি অংশ নিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং আশ্বস্ত করেছে যে, বিশ্ববিদ্যালয়ে সহিংসতা ও সন্ত্রাসমুক্ত পরিবেশ বজায় রাখতে তারা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে। এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের বৈষম্য ও সহিংসতার বিপক্ষে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের দাবি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এমন হামলা শিক্ষার পরিবেশকে ব্যাহত করছে এবং নিরাপত্তার অভাব অনুভূত হচ্ছে। ছাত্রছাত্রীদের একাংশ এ হামলার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত সুরক্ষা ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন।
ডিসি মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেছেন, “বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সহিংসতা সৃষ্টি এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এমন ঘটনায় অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।”
এই গ্রেপ্তার এবং সহিংস ঘটনার প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও প্রশাসনের মধ্যে অনেক আলোচনা ও উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা সহিংসতামুক্ত এবং নিরপেক্ষ শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা এবং উন্নয়ন নিশ্চিত করবে।