প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তী সরকার গণমাধ্যম বন্ধ করবে না এবং সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দেবে। নিউ এইজ সম্পাদক নুরুল কবীরের মতে, সব গণমাধ্যম সরকারের সমর্থক নয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত “ফ্যাসিবাদের বয়ান বনাম গণমানুষের গণমাধ্যম” শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম নিশ্চিত করেছেন যে, অন্তর্বর্তী সরকার গণমাধ্যম বন্ধ করবে না এবং সাংবাদিকদের স্বাধীনতা বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর। একই সময় নিউ এইজ সম্পাদক নুরুল কবীর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমের ভূমিকার ওপর আলোকপাত করেন।
প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, “গণমাধ্যমের ওপর কোনো ধরনের চাপ প্রয়োগ করা হবে না। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো যাতে গণমাধ্যমকে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দেয়, তা নিশ্চিত করা হয়েছে।” তিনি জানান, সরকার চায় সাংবাদিকতার প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ, যাতে গণমানুষ তাদের কণ্ঠস্বর ফিরে পায় এবং গণতন্ত্র সুরক্ষিত থাকে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, গণতন্ত্রের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সকলকে সচেতন থাকতে হবে। ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থান রোধে গণমাধ্যমের ভূমিকা অপরিহার্য, আর এই ভূমিকা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়েও সহায়ক ছিল বলে উল্লেখ করেন তিনি।
—
নিউ এইজ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবীর বলেন, “এটা বলা ঠিক নয় যে সব গণমাধ্যমই সরকারের দাসত্ব করেছে। জনগণের বিভিন্ন অভিযোগ ও সমস্যার বেশিরভাগই তারা গণমাধ্যমের মাধ্যমেই জেনেছে। যারা স্রোতের বিপরীতে কাজ করেছেন, তাদের ঝুঁকি ছিল প্রচুর, কিন্তু তারা কখনো নিজেদের দায়িত্ব থেকে পিছু হটেননি।”
তিনি আরও জানান, গণমাধ্যম যখন সঠিক ভূমিকা পালন করে, তখনই গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো সম্ভব হয়।
—
ফ্যাসিবাদ সাধারণত সমাজে ভিন্নমত দমনের চেষ্টা করে। এতে মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়ে। বাংলাদেশে গণমাধ্যম সবসময়েই জনগণের কণ্ঠস্বর রক্ষার প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে। বর্তমান সরকারের আশ্বাস এবং গণমাধ্যমের সাহসী ভূমিকা একত্রিতভাবে ফ্যাসিবাদ রোধে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় সাংবাদিকতার ওপর বিশেষ সহায়তা ও স্বাধীনতা প্রদান করা হয়েছিল, যা অনেককেই সাহসী ভূমিকা পালনে উৎসাহিত করেছিল। এই অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতে সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যমের জন্য একটি দিকনির্দেশক হতে পারে।
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধের জন্য গণতন্ত্র সচেতনতা অপরিহার্য। বর্তমান সরকারের প্রতিশ্রুতি যদি বাস্তবায়িত হয়, তাহলে বাংলাদেশের গণমাধ্যমের একটি নতুন যুগের সূচনা হতে পারে, যেখানে মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সুরক্ষিত থাকবে।