ঢাকার মানিক মিয়া এভিনিউতে অবস্থিত ন্যাম ভবনটি (এমপি হোস্টেল) মূলত জাতীয় সংসদের সদস্যদের জন্য নির্ধারিত একটি আবাসন স্থান। নির্বাচিত ও সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্যরা পরিবারসহ এখানেই বসবাস করতেন, যা তাদের একটি নিরাপদ ও নিরিবিলি পরিবেশ প্রদান করত। বিভিন্ন সময় এখানে তাদের পরিবারের শিশুদের খেলাধুলা করতে এবং এলাকার জনগণ ও রাজনৈতিক নেতাদের যাতায়াত করতে দেখা যেতো। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এখানে একটি বড় পরিবর্তন এসেছে। গত ৫ আগস্টের পর থেকে এই ভবনের চিত্র পাল্টে গেছে। সেনা ও পুলিশ সদস্যদের বিশেষ প্রয়োজনের কারণে ন্যাম ভবনের কয়েকটি ভবন এখন তাদের দখলে এবং বাকিগুলো খালি পড়ে আছে।
ন্যাম ভবনের রিসিপশনিস্ট মো. গোলাম রব্বানীর বরাতে জানা যায় যে, ৪ আগস্ট একজন সংসদ সদস্য তার পরিবার নিয়ে ন্যাম ভবনের ১ নম্বর ভবনে উঠেছিলেন। তবে, পরদিনই তাদের এই ফ্ল্যাট ত্যাগ করতে হয়। এর পরের দিন, অর্থাৎ ৫ আগস্টের মধ্যে সংসদ সদস্যদের পরিবারগুলোও ভবন ছাড়তে শুরু করে এবং ওইদিনের মধ্যেই দুটি ভবন ব্যতীত ন্যাম ভবনের সব ভবন খালি হয়ে যায়। ১ ও ৩ নম্বর ভবনে বর্তমানে সেনা ও পুলিশ সদস্যদের ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। ফলে সংসদ সদস্যদের পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা কোনো ঝামেলা না করে নিজ নিজ জিনিসপত্র রেখে ভবন ছেড়ে চলে যান।
সংরক্ষিত আসনের সদস্যদের পরিবার-পরিজনরা ন্যাম ভবনে অবস্থান করলেও ৪ এবং ৫ আগস্টের মধ্যে অনেকেই সেনানিবাসে চলে যান। এসময় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে সাধারণ ছাত্র ও জনতার একটি অংশ ভবনের ভেতরে প্রবেশ করে এবং ভবন ভাঙচুরের চেষ্টা করে। তবে সরকারি কর্মচারীদের অনুরোধে তারা এই তৎপরতা থেকে বিরত থাকে এবং ভবনকে আগুন দেয়ার প্রচেষ্টা ত্যাগ করে।
সংসদ সচিবালয় থেকে সংসদ সদস্যদের ব্যক্তিগত সম্পদ নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। তবে সংসদ সদস্য বা তাদের পরিবারের কেউ নিজেরা মালামাল সংগ্রহ করতে আসেননি। বরং তাদের আত্মীয়স্বজন বা মনোনীত প্রতিনিধিরা এসে সংসদ সদস্যদের মালামাল নিয়ে যান। কিছু ফ্ল্যাটে এখনও সংসদ সদস্যদের ব্যক্তিগত মালামাল অবশিষ্ট আছে।