ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ভারত কেবল যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা নয়, যুক্তরাজ্য ও পাকিস্তানেও গুপ্তহত্যা মিশন চালিয়ে আসছে। কানাডায় খালিস্তানপন্থি শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জারের হত্যা এবং যুক্তরাষ্ট্রে আরেক শিখ নেতা গুরপতওয়ান্ত সিং পান্নুন হত্যাচেষ্টার ঘটনায় ভারতের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান অভিযোগ উঠে আসছে। এই ঘটনাগুলির পরিপ্রেক্ষিতে নয়াদিল্লি ও অটোয়ার মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করেছে।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, নয়াদিল্লি কূটনৈতিক অঙ্গনে নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। শুধু হত্যাকাণ্ড নয়, চাঁদাবাজি, হুমকি-ধামকি এবং জবরদস্তিমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ভারত তার কৌশলগত অবস্থান শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে।
প্রতিবেদনটি আরও দাবি করে, ভারতের এই কার্যক্রম শুধু যুক্তরাষ্ট্র বা কানাডার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। যুক্তরাজ্য ও পাকিস্তানেও ভারতীয় গুপ্তঘাতক মিশন সক্রিয় রয়েছে। এসব দেশে বসবাসরত শিখ কর্মীরা গার্ডিয়ানকে জানিয়েছেন যে, তারা বিভিন্ন সময় হত্যার হুমকি পেয়েছেন। তাদের মতে, এর পেছনে রয়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মদদ।
গার্ডিয়ানের দাবি, ভারতের এই গুপ্তহত্যা পরিকল্পনার জন্য ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদকে আদর্শ হিসেবে মানা হচ্ছে। এমনকি হত্যাকারীদেরকে সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের মতো পদ্ধতি অনুসরণ করার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন না করলেও গুরপতওয়ান্ত সিং পান্নুন হত্যাচেষ্টা ইস্যুটি দুই দেশের ভূরাজনৈতিক সম্পর্ককে আড়ালে রাখবে। বিশেষজ্ঞরা গার্ডিয়ানকে জানিয়েছেন, যদি শিখ নেতা হত্যাচেষ্টার অভিযোগগুলির মধ্যে একটি প্রমাণিত হয়, তবে ভারতের শাসক দল বিজেপি কর্তৃক ভিন্নমতাদর্শীদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগের ভিত্তি আরও মজবুত হবে।
গুরুতর অভিযোগ সত্ত্বেও, নয়াদিল্লি এ বিষয়ে এখনও কোনো মন্তব্য করেনি। এটি পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে এবং আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগের জন্ম দিচ্ছে।
এই প্রতিবেদনটি কেবল ভারতের বিরুদ্ধে নয়, বরং বৃহত্তর ভূরাজনৈতিক সমীকরণের দিকেও নজর আকর্ষণ করছে। এখন দেখার বিষয়, ভারতের এই কার্যক্রম নিয়ে ভবিষ্যতে কূটনৈতিক পদক্ষেপগুলি কীভাবে এগোবে।
—