ইউক্রেনের গোয়েন্দা প্রধান কিরিলো বুদানোভ জানিয়েছেন, প্রায় ১১ হাজার উত্তর কোরিয়ার সৈন্য রাশিয়ার পূর্বাঞ্চলে ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নেওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থার মতে, ইতোমধ্যে ১,৫০০ উত্তর কোরীয় সৈন্য রাশিয়ায় পৌঁছেছে, যা খুব শিগগিরই ১২ হাজারে পৌঁছাতে পারে। সিউল এই ঘটনাকে ‘গুরুতর নিরাপত্তা হুমকি’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে প্রতিক্রিয়া জানাতে আহ্বান জানিয়েছে।
সম্প্রতি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে একটি সামরিক চুক্তি অনুমোদনের জন্য সংসদে বিল উত্থাপন করেছেন, যেখানে উভয় দেশ একে অপরকে আক্রমণের মুখে সহযোগিতা করার অঙ্গীকার করেছে। বুদানোভ জানিয়েছেন, নভেম্বরের শুরুতেই উত্তর কোরিয়ার সৈন্যরা ইউক্রেনে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবে এবং প্রথমে ২,৬০০ সৈন্য কুরস্ক অঞ্চলে পাঠানো হবে।
দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনআইএস) জানায়, উত্তর কোরিয়া ইতোমধ্যে রাশিয়ায় ১৩ হাজার শিপিং কন্টেইনারে গোলাবারুদ, ক্ষেপণাস্ত্র এবং রকেট সরবরাহ করেছে, যার মধ্যে প্রায় ৮০ লাখ শেল রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ইউক্রেনের পলটাভা অঞ্চলে উত্তর কোরিয়ার একটি ক্ষেপণাস্ত্র উদ্ধার হওয়ায় এই অভিযোগের সত্যতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
উত্তর কোরিয়ার সৈন্যরা রাশিয়ার ভ্লাদিভোস্টক, উসুরি, খাবারোভস্ক এবং ভ্লাগোভেশেনস্কে সামরিক ঘাঁটিতে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। গোয়েন্দা সংস্থা জানায়, আগস্ট থেকে এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এছাড়া, আকাশ থেকে তোলা ছবিতে উসুরি ও খাবারোভস্কে শতাধিক উত্তর কোরীয় সৈন্যের উপস্থিতি দেখা গেছে।
সামরিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, উত্তর কোরিয়ার সৈন্যদের সরাসরি ফ্রন্টলাইনে যুক্ত করা কঠিন হবে, কারণ তাদের সাম্প্রতিক যুদ্ধে অভিজ্ঞতা কম এবং ভাষাগত সমস্যা রয়েছে। বিশেষজ্ঞ ভ্যালেরি রায়াবিখের মতে, “তারা সীমান্ত পাহারায় থাকতে পারে, যা রাশিয়ার সৈন্যদের অন্য স্থানে যুদ্ধে পাঠানোর সুযোগ করে দেবে।”
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রাশিয়া এবং উত্তর কোরিয়ার মধ্যে কৌশলগত সহযোগিতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। গত সপ্তাহে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের জন্মদিনে তাকে ‘ঘনিষ্ঠতম সহচর’ হিসেবে উল্লেখ করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।