ঢাকা, ১৬ অক্টোবর: ঐতিহাসিক ৭ই মার্চসহ আটটি জাতীয় দিবস বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। দলটির অভিযোগ, বর্তমান সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধের পরিপন্থী পদক্ষেপ গ্রহণ করছে এবং এসব পদক্ষেপের মাধ্যমে রাষ্ট্রের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে মুছে ফেলার চেষ্টা চলছে।
আজ (১৬ অক্টোবর) আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এসব কথা জানানো হয়। দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী ব্যক্তিদের শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করছে এবং বিভিন্নভাবে তাদের দমন করার চেষ্টা করছে। তারা বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং জাতীয় ইতিহাসের প্রতীকী দিবসগুলোকে বাতিল করার মধ্য দিয়ে জাতীয় ঐতিহ্যকে বিলুপ্ত করতে চাইছে।
আজ প্রধান উপদেষ্টার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এক পোস্টে জানানো হয়, ঐতিহাসিক ৭ মার্চ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস (১৭ মার্চ), শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী (৫ আগস্ট), বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী (৮ আগস্ট), জাতীয় শোক দিবস (১৫ আগস্ট), শেখ রাসেল দিবস (১৮ অক্টোবর), জাতীয় সংবিধান দিবস (৪ নভেম্বর) এবং স্মার্ট বাংলাদেশ দিবস (১২ ডিসেম্বর) বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ সরকারের এ সিদ্ধান্তকে ‘প্রতিহিংসামূলক’ বলে অভিহিত করে জানায়, “বাঙালি জাতি এ ধরনের পদক্ষেপ মেনে নেবে না। আমাদের জাতীয় ইতিহাসে এসব দিবসের তাৎপর্য অনস্বীকার্য এবং তা মুছে ফেলার চেষ্টা করা বিভেদ ও প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির রাজনৈতিক অভিপ্রায়কে প্রমাণ করে।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ জাতি সরকারের এ হীন পদক্ষেপের উপযুক্ত জবাব দেবে এবং ঐতিহ্য ও ইতিহাস রক্ষায় সামাজিক ও সাংস্কৃতিকভাবে বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করবে।”
আওয়ামী লীগের বিবৃতিতে ‘রিসেট বাটন’ চাপ দিয়ে জাতীয় ইতিহাস পুনর্লিখনের চেষ্টা করার প্রবণতা তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। দলটি জানিয়েছে, “আমাদের জাতীয় ইতিহাসের ভিত্তি অত্যন্ত মজবুত, এবং তা কোনোভাবেই পরিবর্তন করা সম্ভব নয়।”
বিবৃতির শেষে আওয়ামী লীগ জানায়, “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অটুট রাখতে ও সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থেকে আমরা সত্য ও সুপথে চলব।” বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, বাঙালি জাতি বারবার তাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রতি অনুরাগের প্রমাণ দিয়েছে এবং এবারও দিবসগুলো মমতায় পালন করবে।
কীভাবে এই সিদ্ধান্ত জাতীয় ঐতিহ্যের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে তা নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা চলছে।