ঢাকা, ১৬ অক্টোবর: দলীয় ভিত্তিতে পালন করা কিছু দিবস বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আজ বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে তথ্য উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম জানান, যেসব দিবস জাতীয় গুরুত্বের নয় এবং শুধুমাত্র দলীয় ভিত্তিতে উদযাপিত হতো, সেগুলোই বাতিল করা হয়েছে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমরা গণঅভ্যুত্থানের চেতনায় ৫ আগস্ট নতুন দিবস হিসেবে যুক্ত করার বিষয়ে আলোচনা করছি। মহান মুক্তিযুদ্ধে শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই নয়, আরও অনেকের অবদান রয়েছে। উদাহরণ হিসেবে, মাওলানা ভাসানীর অবদানও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যা আওয়ামী লীগ প্রায়শই উপেক্ষা করেছে।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, “শেখ মুজিবুর রহমানের সুনাম আওয়ামী লীগ নিজের কার্যকলাপের মাধ্যমে ক্ষুণ্ন করেছে। ৭ মার্চের ভাষণ ইতিহাসের অংশ হলেও, সেটিকে জাতীয় দিবস হিসেবে পালনের প্রয়োজন নেই। প্রকৃতপক্ষে, দেশের সবাই তাকে জাতির জনক হিসেবে মানে না।”
এর আগে, আজ সকালে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে বাতিল হতে যাওয়া আটটি দিবসের কথা জানানো হয়। বাতিলের তালিকায় থাকা পাঁচটি দিবস সরাসরি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবারের সদস্যদের জন্ম ও মৃত্যু উপলক্ষ্যে উদযাপিত হতো। এই দিবসগুলো হলো:
১৭ মার্চ: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস
৫ আগস্ট: শেখ হাসিনার ভাই ক্যাপ্টেন শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী
৮ আগস্ট: শেখ হাসিনার মা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী
১৫ আগস্ট: বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস
১৮ অক্টোবর: শেখ হাসিনার ছোট ভাই শেখ রাসেল দিবস
এছাড়াও, বাতিলের তালিকায় রয়েছে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ, ৪ নভেম্বর জাতীয় সংবিধান দিবস এবং ১২ ডিসেম্বর স্মার্ট বাংলাদেশ দিবস।
তথ্য উপদেষ্টা জানান, ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের চেতনা স্মরণে নতুন একটি দিবস যুক্ত করা হতে পারে কিনা, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। জনগণের মতামতের ভিত্তিতে এবং দেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতিকে গুরুত্ব দিয়ে নতুন দিবস সংযোজন করা হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।
এই সিদ্ধান্তগুলোর মাধ্যমে সরকার জাতীয় দিবসগুলোর মান বজায় রাখার পাশাপাশি জনগণের অংশগ্রহণ ও গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলোর গুরুত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চায় বলে জানান মো. নাহিদ ইসলাম।
—