শেরপুর জেলা কারাগারে দুর্বৃত্তদের হামলায় পালিয়ে যাওয়া ৫১৮ বন্দির মধ্যে এখনও ৩৬৬ জন ধরা পড়েনি। প্রায় দুই মাসের বেশি সময় পরও তাদের আটক করা সম্ভব হয়নি, যার ফলে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। অন্যদিকে, কারাগারের মেরামত কাজ এখনও শেষ না হওয়ায় কার্যক্রম চালু করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন কারা কর্তৃপক্ষ।
গত ৫ আগস্ট, ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর, ওই দিন বিকেলেই শেরপুর জেলা কারাগারে দুর্বৃত্তরা হামলা চালায়। এসময় তারা কারাগারের বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। এ হামলার পর ৫১৮ জন বন্দি পালিয়ে যায়, যার মধ্যে মাত্র ১৩০ জন আত্মসমর্পণ করেছে এবং ২২ জনকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, পলাতক বন্দিরা অবাধে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে, যা সাধারণ মানুষের জন্য হুমকি স্বরূপ। তাদের মতে, চিহ্নিত অপরাধীরা মুক্তভাবে ঘোরাফেরা করছে এবং বিভিন্ন অপরাধে লিপ্ত হচ্ছে, ফলে এলাকাবাসীর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। সাধারণ মানুষ দ্রুত বন্দিদের পুনরায় কারাবন্দি করার দাবি জানিয়েছে, যাতে তারা স্বস্তিতে চলাফেরা করতে পারে।
র্যাব-১৪ কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘এখনও তিন শতাধিক আসামি বাইরে আছে। আমাদের লক্ষ্য হলো তাদের যত দ্রুত সম্ভব গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা।’
দুমাস পেরিয়ে গেলেও শেরপুর জেলা কারাগারের মেরামত কাজ এখনো সম্পূর্ণ হয়নি। গণপূর্ত বিভাগ বলছে, টেন্ডার প্রক্রিয়া এবং নির্দেশনা পাওয়ার পর থেকেই তারা নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে কাজ শেষ করার চেষ্টা করছে। শেরপুরের গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমরা কোনো কালক্ষেপণ করিনি। টেন্ডার শিডিউলে যে সময়সীমা উল্লেখ করা হয়েছে, আমরা সে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।’
শেরপুর জেলা কারাগারের সুপার মো. হুমায়ুন কবীর খান জানান, ‘গণপূর্ত বিভাগ মেরামত কাজ শেষ করলেই কারাগারের কার্যক্রম চালু করা হবে।’
বর্তমানে আটককৃত বন্দিদের জামালপুর জেলা কারাগারে রাখা হয়েছে। স্থানীয়রা আশাবাদী, পলাতক বন্দিদের দ্রুত পুনরায় আটক করা হবে এবং শেরপুর জেলা কারাগার আবারও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে।