বাজারে সাধারণ ডিমের পাশাপাশি অর্গানিক ডিমের উচ্চমূল্য ভোক্তাদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। সাধারণ ডিমের ক্ষেত্রে যেখানে প্রতি ডজনের মূল্য ১৪২ টাকা, সেখানে কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো অর্গানিক ডিমের জন্য দাবি করছে আড়াইশ টাকা বা তারও বেশি। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, এই বাড়তি দাম কি শুধু ব্র্যান্ডিং, নাকি এর পেছনে আছে অন্য কোনো কারণ?
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর জানায়, অর্গানিক বলে বেশি দামে বিক্রি করার সঠিক কোনো প্রমাণ তারা পায়নি। অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আবদুল জব্বার মণ্ডল বলেন, “আমরা উৎপাদক ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে অর্গানিক ডিমের সনদ ও পরীক্ষার রিপোর্ট চেয়েছিলাম, কিন্তু তারা তা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে।” যদিও প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, প্রতি তিন মাস পর পর ডিমের পরীক্ষা রিপোর্ট সরবরাহ করবে।
অন্যদিকে, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক বলেন, “ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ অর্গানিক ডিমের মূল্য উন্নত দেশেও বেশি থাকে। তাই এটি মূল্য যোগ করে বাজারে বিক্রি করা হয়। তবে এর মধ্যে কিছু পুষ্টি উপাদান থাকলেও, সম্পূর্ণ অযৌক্তিক দাম দাবি করা ঠিক নয়।”
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, একজন মানুষের বছরে ন্যূনতম ১০৪টি ডিম খাওয়া প্রয়োজন। তবে বাংলাদেশের বর্তমান পরিসংখ্যান অনুযায়ী, একজন ব্যক্তির জন্য বার্ষিক গড় ডিমের প্রাপ্যতা ১৩০টির বেশি। এত উদ্বৃত্ত ডিমের পরও খুচরা বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় অনেকেই অস্বস্তিতে ভুগছেন।
অর্গানিক ডিমের নাম দিয়ে বেশি দাম আদায় করার পেছনে আসলেই কী পুষ্টি উপাদানের যোগান রয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। পুষ্টিবিদদের মতে, খারাপ খাদ্যে লালিত মুরগির ডিম খেলে পুষ্টি কমে যেতে পারে এবং এমনকি তা মানবদেহে ক্যান্সারের মতো জটিল রোগও সৃষ্টি করতে পারে।
তবে বাজারে পাওয়া ডিমগুলো কীভাবে উৎপাদিত হচ্ছে, তা নিয়ে কোনো সুস্পষ্ট তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি।