ভারতের রাজধানী দিল্লিতে পালিয়ে গেছেন বাংলাদেশের পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি এবং বিশেষ শাখার (এসবি) প্রধান মনিরুল ইসলাম। রোববার (৬ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে প্রবাসী বাংলাদেশি অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের তার ভেরিফাইড ফেসবুকে একটি পোস্টের মাধ্যমে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। পোস্টের সঙ্গে মনিরুল ইসলামের একটি ছবিও প্রকাশ করেছেন, যেখানে তাকে দিল্লির কণট প্লেসের (Connaught Place) একটি গ্রোসারি স্টোরে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য কিনতে দেখা যায়।
মনিরুল ইসলামের পালিয়ে যাওয়ার গুঞ্জন এবং সাক্ষাৎকার
পুলিশের বিশেষ শাখার সদ্য সাবেক প্রধান মনিরুল ইসলামের পালিয়ে যাওয়ার গুঞ্জন বেশ কিছুদিন ধরেই চলছিল। তবে সম্প্রতি গণমাধ্যমে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি দাবি করেছিলেন, “আমি পালিয়ে যাইনি, পালানোর কোনো প্রশ্নই ওঠে না। আমি দেশেই ছিলাম, দেশেই আছি, এবং ভবিষ্যতেও দেশেই থাকবো।” তবুও, দিল্লির কণট প্লেসে তার উপস্থিতি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।
২৫ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ
মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে বর্তমানে ডিএমপির বিভিন্ন থানায় ১২টির বেশি হত্যা ও হত্যাচেষ্টার মামলা রয়েছে। তবে তার বিরুদ্ধে সবচেয়ে আলোচিত অভিযোগটি হলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনের জন্য ২৫ কোটি টাকা বিতরণের। অভিযোগ রয়েছে, গত ৩ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের কাছ থেকে তিনি এই টাকা সংগ্রহ করেন এবং নিজের কক্ষে রাখেন। তবে ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকারের পতন হলে তিনি আর অফিসে যাননি। এর পর থেকে তাকে আর জনসম্মুখে দেখা যায়নি।
তদন্ত ও পলাতক অবস্থার খবর
মনিরুল ইসলামের কক্ষে থাকা ওই ২৫ কোটি টাকার বিষয়ে পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তা অবগত ছিলেন এবং পরবর্তীতে সেই টাকা কয়েকজন কর্মকর্তার দ্বারা হাতিয়ে নেয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় তদন্তের জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়, যার নেতৃত্বে ছিলেন স্পেশাল সিকিউরিটি অ্যান্ড প্রোটেকশন ব্যাটালিয়নের (এসপিবিএন) ডিআইজি গোলাম কিবরিয়া।
সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের তার পোস্টে দাবি করেন, দিল্লির যে এলাকায় মনিরুল ইসলামকে দেখা গেছে, সেখানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পলাতক বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বসবাস করছেন। ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে যাতে এসব পলাতকদের খুঁজে বের করে দ্রুত বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়।