ঢাকা, ৩ অক্টোবর:
গ্যাস সংকট কমাতে এবং দেশের গ্যাসের রিজার্ভ পুনরুদ্ধারে সরকার ২০২৫ সালের মধ্যে ৫০টি গ্যাসকূপ খননের উদ্যোগ নিয়েছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান।
তিনি বলেন, বর্তমান গ্যাসের সংকট এবং রিজার্ভের ঘাটতি পূরণে সরকারকে ব্যয়বহুল এলএনজি আমদানি করতে হচ্ছে। তিনি আরও জানান, সরকার ইতোমধ্যে সমুদ্রের গভীরে গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রমে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে, যেখানে সাতটি প্রতিষ্ঠান আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
খনন কার্যক্রমের অগ্রগতি:
বর্তমানে ৫০টি গ্যাসকূপ খননের পরিকল্পনার আওতায় ১৫টি কূপ খনন করা হয়েছে, যার ফলে প্রতিদিন ১৭৬ মিলিয়ন ঘনফুট উত্তোলনযোগ্য গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে। তবে পাইপলাইনের অভাবে জাতীয় গ্রিডে এখন পর্যন্ত মাত্র ৭৬ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে।
মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান জানান, ২০২৫ সালের মধ্যে আরও ৩৫টি গ্যাসকূপ খনন করা হবে। এর মধ্যে ১১টি কূপ খনন করবে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন এন্ড প্রোডাকশন কোম্পানী লিমিটেড (বাপেক্স), এবং বাকি ২৪টি উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে বরাদ্দ দেওয়া হবে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা:
২০২৮ সালের মধ্যে আরও ১০০টি গ্যাসকূপ খননের পরিকল্পনা রয়েছে, যার মধ্যে ৬৯টি স্থলভাগে অনুসন্ধান করা হবে। বাপেক্স ৩৩টি কূপ এবং ১০টি রিগ ভাড়া নিয়ে এই কার্যক্রম পরিচালনা করবে, আর বাকি ২৬টি উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হবে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, “কোনও প্রকল্পের সময় আর বাড়ানো হবে না এবং আগামী সপ্তাহেই টেন্ডার আহ্বান করা হবে।”
আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির প্রভাব:
ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের কারণে মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা বিরাজ করছে, যা জ্বালানি তেলের মূল্যে প্রভাব ফেলতে পারে। তবে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, এই অস্থিরতা জ্বালানি বাজারে বড় ধরনের ধাক্কা দেবে না। সরকার এ বিষয়ে সতর্ক রয়েছে বলে তিনি জানান।
এই গ্যাস অনুসন্ধান ও খনন প্রকল্পগুলোর সফল বাস্তবায়ন দেশের জ্বালানি সংকট অনেকটাই কমিয়ে আনবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।