বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার কারণে বেড়ে চলেছে। ইরান মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) রাতে তেলআবিবে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার পর, তেল সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা জাগছে। রয়টার্স ও আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই পরিস্থিতির কারণে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিশ্ববাজারের তথ্যমতে, ব্যারেলপ্রতি অপরিশোধিত তেলের দাম ১.০৫ ডলার বা ১.৪৮ শতাংশ বেড়ে ৭০.৮৬ ডলারে পৌঁছেছে। এছাড়া ব্রেন্ট অপরিশোধিত তেলের দামও ৮৩ সেন্ট বা ১.১৩ শতাংশ বেড়ে ৭৪.৩৯ ডলারে দাঁড়িয়েছে। ইউএস ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (WTI) তেলের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক সংঘাত ও তেলের সরবরাহ সংকট
মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম প্রধান তেল উৎপাদনকারী দেশ ইরানের সামরিক পদক্ষেপ বিশ্ব অর্থনীতিতে উদ্বেগ তৈরি করেছে। ইসরায়েলের ওপর ইরান ১৮০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার পর, বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন যে, এই সংঘাতের ফলে তেল সরবরাহে বড় ধরনের বিঘ্ন ঘটতে পারে।
লেবানন এবং গাজার যুদ্ধে ইরানের সম্পৃক্ততা নিয়ে বিশ্বমহল উদ্বিগ্ন। বিশ্লেষকরা বলছেন, যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়লে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেলে জ্বালানি তেলের দাম আরও বাড়বে। ওপেকের সদস্য ইরানের সামরিক পদক্ষেপ এবং ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘর্ষের ফলে তেলের সরবরাহের উপর প্রভাব পড়ার আশঙ্কা তীব্রতর হয়েছে।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক
মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা নিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে একটি জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। বুধবার (২ অক্টোবর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন ইরানের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এবং ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসকে (IRGC) সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করার আহ্বান জানাবেন।
অন্যদিকে, ইরান দাবি করেছে যে, ইসরায়েলের গণহত্যার প্রতিবাদে তারা সতর্কতামূলক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে এবং তারা আশা করে, ইসরায়েল পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেখাবে না।
এই উত্তেজনা যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে বিশ্ববাজারে তেলের সরবরাহ ও দামের ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।