সম্প্রতি সমবায় ব্যাংকের ১২ হাজার ভরি স্বর্ণের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলে চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ। এ নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। ২৯ সেপ্টেম্বর, রোববার কুমিল্লায় পল্লী উন্নয়ন একাডেমী বার্ডের ৫৭তম বার্ষিক পরিকল্পনা সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ তথ্য দেন তিনি।
এএফ হাসান আরিফ জানান, সমবায় ব্যাংকের এই বিশাল পরিমাণ স্বর্ণের হিসাব নিয়ে অনিয়ম ধরা পড়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাংকের বিভিন্ন আর্থিক লেনদেন ও সম্পদ ব্যবস্থাপনা পর্যালোচনা করে এই অনিয়ম উঠে এসেছে। এত বড় সংখ্যক সম্পদের অনুপস্থিতি ব্যাংকের কার্যক্রম ও স্বচ্ছতা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
এ ধরনের একটি প্রতিষ্ঠানে এত বড় আকারে সম্পদ অনুপস্থিতির ঘটনা নতুন করে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি আর্থিক খাতের শৃঙ্খলার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাংকিং ব্যবস্থা নিয়ে আস্থা কমে যেতে পারে, যা দেশের অর্থনীতির ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সমবায় ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনার ওপর একটি বিস্তৃত তদন্ত শুরু হয়েছে। এফ হাসান আরিফ জানান, ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটনে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই তদন্তে ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ভূমিকা, হিসাব-নিকাশের ত্রুটি এবং সম্ভাব্য আর্থিক প্রতারণার মতো বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এ ধরনের ঘটনার পর জনগণের মধ্যে আস্থা ফিরে পেতে সরকারের বিভিন্ন মহল থেকে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছেন, দ্রুত সময়ে এই সমস্যার সমাধান হবে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশের আর্থিক খাতে সমবায় ব্যাংকের এই ঘটনা ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ঘটনার ফলে দেশের ব্যাংকিং সেক্টরে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। এছাড়া, ব্যাংকিং খাতের উন্নয়ন ও জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারকে আরও কার্যকর নীতি গ্রহণ করতে হবে।
সমবায় ব্যাংকের ১২ হাজার ভরি স্বর্ণের খোঁজ না পাওয়ার ঘটনা দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা, নৈতিকতা ও জবাবদিহিতা নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দ্রুত সমাধান না হলে আর্থিক খাতের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। জনগণের আস্থা পুনঃস্থাপনের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ এখন সময়ের দাবি।