বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি, দীর্ঘ এক দশকেরও বেশি সময় ধরে রাজনৈতিক নিপীড়ন ও সাংগঠনিক কার্যক্রমে বাধার সম্মুখীন হয়েছে। তবে এবারে, ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর দল গোছানোর নতুন উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপি। এ লক্ষ্যে দলটি সারা দেশে কর্মীসভা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যার মাধ্যমে দলের হাইকমান্ডের বার্তা তৃণমূলে পৌঁছে দেওয়াই প্রধান উদ্দেশ্য।
প্রথম দফায়, আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম, সিলেট ও বরিশাল বিভাগে ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের যৌথ কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হবে। এই কর্মসূচি সার্বিকভাবে তত্ত্বাবধান করবে তিনটি কমিটি। পরবর্তীতে, আটটি বিভাগের ৬৪টি জেলায় এবং পর্যায়ক্রমে উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়েও কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হবে। দলকে পুনর্গঠন ও আসন্ন নির্বাচনের প্রস্তুতির বার্তা সরাসরি তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছানোই বিএনপির অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।
বিএনপির ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির জানিয়েছেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেওয়া বিশেষ বার্তা তৃণমূলে পৌঁছানো হবে। পাশাপাশি, দলের ভবিষ্যতের রাজনীতি কোন পথে পরিচালিত হবে, তা নিয়ে কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা হবে।’
যুবদলের সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না বলেন, ‘দলীয় কর্মসূচির মাধ্যমে আমাদের নেতাকর্মীদের মাঠে সক্রিয় রাখা এবং সংগঠনের কার্যক্রমে ব্যস্ত রাখা আমাদের মূল লক্ষ্য। আমরা ইতোমধ্যেই বিভাগীয় পর্যায়ে সভা সম্পন্ন করেছি, এবার জেলাভিত্তিক সভা শুরু করছি।’
স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান বলেন, ‘কিছু জায়গায় কমিটি সক্রিয় নেই বা অসঙ্গতি রয়েছে। যৌথ কর্মীসভার মাধ্যমে এসব সমস্যা শনাক্ত করে সংগঠনকে নতুন করে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করছি।’
বিএনপির শীর্ষ নেতারা মনে করেন, এই কর্মসূচি দলের সাংগঠনিক কাঠামোকে আরও শক্তিশালী করবে এবং আসন্ন নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত থাকতে সহায়তা করবে। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ‘এই উদ্যোগ আমাদের সংগঠনের কার্যক্রম আরও শক্তিশালী করবে। যাতে কোনো নির্বাচনের ঘোষণা এলে আমাদের প্রস্তুতি যথাযথ থাকে।’
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক জানান, ‘দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে মামলা-হামলায় দলের নেতাকর্মীরা জর্জরিত ছিল। সেই সময়ে আমরা সঠিকভাবে সম্মেলনও করতে পারিনি। এবার দলকে শক্তিশালী করার জন্য আমাদের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’