ঢাকা: বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের উল্লেখযোগ্য হ্রাস দেখা গেছে। বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, আইএমএফের বিপিএম-৬ হিসাব মান অনুযায়ী ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিট রিজার্ভ ১৯ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। অন্যদিকে, গ্রস বা মোট রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৪ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলার।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ২৯ আগস্ট নিট রিজার্ভ ছিল ২০ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলার, যা বর্তমানে আরও কমে গেছে। একই সময়ে, গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২৫ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলার। এই ব্যবধানে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের পরিমাণ ১৫ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে, যা নিয়ে বিশেষজ্ঞ মহলে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
রেমিট্যান্স প্রবাহে ইতিবাচক গতি
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে রেমিট্যান্সের গতি ভালো থাকায় এ মাসের শেষ পর্যন্ত আড়াই বিলিয়ন ডলারের মতো রেমিট্যান্স আসার আশা রয়েছে। বৈধ পথে ডলারের মূল্যের বৃদ্ধি এবং হুন্ডি থেকে সরে আসার প্রবণতা এ প্রবাহকে বাড়িয়ে দিয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর ক্ষেত্রে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং ডলারের মূল্যবৃদ্ধি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
রিজার্ভের পতনের পেছনের কারণ
গত দুই বছরে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ব্যাপকভাবে কমে যাওয়ার কারণে অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন। বর্তমান রিজার্ভের পতন নিয়ে আলাপ-আলোচনা চললেও, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নতুন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করা আহসান এইচ মনসুর রিজার্ভ বৃদ্ধির বিষয়ে আশ্বাস প্রদান করেছেন।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রেমিট্যান্স প্রবাহ যদি বর্তমান ধারা বজায় রাখে এবং বৈধ পথে অর্থ পাঠানোর প্রতি জনগণের আগ্রহ বৃদ্ধি পায়, তবে শিগগিরই রিজার্ভের চাপে কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যেতে পারে।
এই প্রতিবেদনটি বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক অবস্থার একটি স্পষ্ট চিত্র তুলে ধরেছে, যা দেশের ভবিষ্যৎ অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।