ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় ইউটিউবার এলভিশ যাদবের বিপক্ষে বড় ধরনের আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) সম্প্রতি তার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে বন্যপ্রাণী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে। বন্যপ্রাণী অপরাধ আইনে বেআইনিভাবে মিউজিক ভিডিও এবং ভ্লগে বন্যপ্রাণী ব্যবহার করায় তার বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এলভিশ যাদবের বিরুদ্ধে নেওয়া আইনি পদক্ষেপের মধ্যে উত্তর প্রদেশের চাষযোগ্য জমি এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সহ প্রায় ৫২ লাখ ৪৯ হাজার টাকার সমমূল্যের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এসব সম্পত্তি এলভিশ যাদব, তার ভাই রাহুল যাদব এবং তাদের কোম্পানি স্কাই ডিজিটাল ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের নামে ছিল। ২০০২ সালের আর্থিক প্রতারণার ধারায় এ বাজেয়াপ্তকরণ হয়েছে।
গত বছরের মার্চ থেকে চলতি বছর পর্যন্ত এলভিশ যাদবের বিরুদ্ধে দুটো মামলা হয়েছে। প্রথম মামলাটি করা হয় একটি স্টিং অপারেশনের পর, যেখানে দেখা গেছে সাপ এবং তাদের বিষ বিভিন্ন ইভেন্টে সরবরাহ করা হচ্ছে। দ্বিতীয় মামলাটি মিউজিক ভিডিও ও কনটেন্টে সাপের ব্যবহারকে কেন্দ্র করে করা হয়েছে।
ইডি জানিয়েছে, এলভিশ যাদব ও রাহুল যাদব তাদের কনটেন্টে বেআইনিভাবে বিশেষ প্রজাতির সাপ এবং এক্সোটিক প্রাণী যেমন ইগুয়ানা ব্যবহার করেছেন। তাদের দাবি, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিউ বাড়ানোর এবং অল্প সময়ের মধ্যে আয় বাড়ানোর জন্য তারা এই বেআইনি পন্থা অবলম্বন করেছেন। স্কাই ডিজিটাল ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড নামে তাদের কোম্পানি মিউজিক ভিডিওগুলো প্রযোজনা করত, যা তাদের ইউটিউব চ্যানেল থেকে প্রকাশিত হতো।
এলভিশ যাদব, জন্মসূত্রে সিদ্ধার্থ যাদব, হরিয়ানার একজন সফল ইউটিউবার। ২০১৬ সালে তিনি ‘দ্য সোশ্যাল ফ্যাক্টরি’ নামে একটি ইউটিউব চ্যানেল শুরু করেন, যা পরবর্তীতে ‘এলভিশ যাদব’ নামে পরিচিতি লাভ করে। তিনি বিভিন্ন কমেডি, স্যোশাল এক্সপেরিমেন্ট এবং বিনোদনমূলক ভিডিও তৈরি করেন, যা ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। এছাড়া, এলভিশ যাদব বিগ বস ওটিটির দ্বিতীয় মৌসুমের বিজয়ী হন, যেখানে পূজা ভাট, অভিষেক মালহান এবং মনীষা রানি প্রমুখের মতো প্রতিযোগীদের হারিয়ে তিনি শিরোপা জিতেছিলেন।
এলভিশ যাদবের বিরুদ্ধে নেওয়া এই আইনি পদক্ষেপ তার ক্যারিয়ারে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। বন্যপ্রাণী অপরাধের কারণে সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হওয়ার ঘটনা তার ভক্ত ও সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ভবিষ্যতে তিনি এই মামলার জটিলতা থেকে কীভাবে মুক্তি পান, সেটাই এখন দেখার বিষয়।