সবশেষ ২০০২ সালে বিশ্বকাপ জিতেছিল ব্রাজিল। নতুন শতাব্দীর প্রথম চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পাশাপাশি ওই আসর নানা কারণে সেলেসাওদের কাছে স্মরণীয় হয়ে আছে। এরপর প্রায় দুই দশক পেরিয়ে গেলেও বিশ্বকাপের সোনালী ট্রফি আর ছুঁয়ে দেখা হয়নি ব্রাজিলের। বিশ্বের বিভিন্ন লিগে ব্রাজিলিয়ান ফুটবলাররা দুর্দান্ত পারফর্ম করলেও হেক্সা মিশনে বারবার হোঁচট খেতে হয়েছে তাদের।
বৈশ্বিক ফুটবল টুর্নামেন্টগুলোতে ব্রাজিল সবসময়ই হট ফেবারিট। ফুটবলের জন্মভূমি বলা হয় ব্রাজিলকে। যুগে যুগে পেলে, রোনালদো, রোনালদিনহো, কাকা, নেইমার, এবং এখন ভিনিসিয়ুসের মতো তারকা খেলোয়াড়রা সেই ঐতিহ্য বহন করে চলেছেন। ব্রাজিলিয়ান ফুটবলাররা বিশ্বের বিভিন্ন লিগে খেলেই দেশটির অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখছেন।
তবে এত প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও বিশ্বকাপের ট্রফিটি ২০০২ সালের পর আর জেতা হয়নি ব্রাজিলের। সময় পেরিয়ে গেলেও ফাইনালের মঞ্চে আর পা রাখতে পারেনি পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। তাই বিশ্বকাপ এলেই হেক্সা মিশনের জন্য নতুন আশার সঞ্চার হয়, কিন্তু প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হচ্ছে ব্রাজিল।
২০০২ সালের সেই বিশ্বকাপ ছিল বিশেষ। প্রথমবারের মতো এশিয়ার মাটিতে অনুষ্ঠিত হওয়া আসরে ফুটবল বিশ্ব নতুন শতাব্দীর প্রথম চ্যাম্পিয়ন পায়। জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া যৌথভাবে বিশ্বকাপ আয়োজন করে নতুন ইতিহাস গড়ে। সেই আসরের ফাইনালে, ব্রাজিল ইয়োকোহামার নিসান স্টেডিয়ামে জার্মানিকে ২-০ গোলে হারিয়ে শিরোপা জেতে।
৭০ হাজার দর্শকের সামনে জমজমাট ফাইনালে, গোলশূন্য প্রথমার্ধের পর রোনালদো নাজারিওর অসাধারণ নৈপুণ্যে ৬৭ ও ৭৯ মিনিটে দুটি গোল করে জয় নিশ্চিত করেন তিনি। টানা তিনবার বিশ্বকাপ ফাইনালে খেলা কাফু শিরোপা হাতে তুলে ইতিহাস গড়েন।
জার্মানির গোলরক্ষক অলিভার কান সেই বিশ্বকাপে অসাধারণ পারফর্ম করলেও ফাইনালে ব্রাজিলের আক্রমণের সামনে নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি। তবুও তার অনবদ্য নৈপুণ্যের কারণে তিনি গোল্ডেন গ্লাভস ও গোল্ডেন বল জেতেন। আর রোনালদো ৮ গোল করে গোল্ডেন বুট নিজের করে নেন।
২০০২ সালের বিশ্বকাপজয়ী ব্রাজিল দল আজও স্মৃতিতে উজ্জ্বল। রোনালদো, রিভালদো, রোনালদিনহো, রবার্তো কার্লোসদের নিয়ে গড়া সেই দল সেলেসাওদের ফুটবল ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়, ব্রাজিলের হেক্সা মিশনের স্বপ্ন আবার কবে বাস্তবে ধরা দেবে?