রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের মৃত্যুকে হত্যাকাণ্ড হিসেবে উল্লেখ করেছে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আবু সাঈদের মুখ থেকে ঊরু পর্যন্ত ছররা গুলির চিহ্ন ছিল, যা শরীরের ভেতরে গর্ত তৈরি করে এবং অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তার মৃত্যু হয়। এছাড়া, তার মাথার বাঁ দিকে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে, তবে এটি মৃত্যুর কারণ নয় বলে জানিয়েছে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক।
ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনটি ৩০ জুলাই তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করা হলেও এটি ২৪ সেপ্টেম্বর রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ পায়। প্রতিবেদনটি তৈরি করেন রংপুর মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সহকারী অধ্যাপক রাজিবুল ইসলাম।
ময়নাতদন্তকারীর মতে, পুলিশের ছররা গুলিতে আবু সাঈদের মৃত্যু হয়েছে। ১০ মিটারের মধ্যে গুলি করায় শরীরের ভেতরের কিছু অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা তার অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণ ছিল। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আবু সাঈদের খাদ্যনালী এবং ঊরুর রক্তনালী ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় রক্ত জমাট বাঁধে, এবং এ কারণেই তিনি শকে চলে যান ও মৃত্যু ঘটে।
আবু সাঈদের মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটে ১৬ জুলাই, যখন দেশের বিভিন্ন স্থানে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন চলছিল। সেই দিন, রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পুলিশের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। ২৫ বছর বয়সী আবু সাঈদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন।
এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। নিরস্ত্র অবস্থায় পুলিশের গুলিতে সাঈদের মৃত্যুর দৃশ্য সবাইকে নাড়িয়ে দেয়, যার ফলে কোটা সংস্কার আন্দোলন আরও তীব্র হয়। এই আন্দোলনের চাপে ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করতে বাধ্য হন এবং দেশ ত্যাগ করেন।