ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে নির্মম মারধরে নিহত তোফাজ্জলকে গ্রামের বাড়িতে তার মা-বাবা ও ভাইয়ের পাশে দাফন করা হয়েছে। বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার চরদুয়ানী গ্রামে অশ্রুসিক্ত জনতার উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হয় তার জানাজা। শুক্রবার সকালে চরদুয়ানী কারিমুল কোরআন মাদ্রাসার সামনে দ্বিতীয় জানাজার পর পারিবারিক কবরস্থানে চিরশায়িত করা হয় এই তরুণকে।
তোফাজ্জলের মৃত্যুর ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে তার পরিবার ও এলাকাবাসীর মাঝে। জানাজার আগে পরিবারের সদস্যরা হত্যাকারীদের কঠোর শাস্তি দাবি করেন। মাওলানা মুফতি ফয়সাল, যিনি তোফাজ্জলের বাবা-মায়ের জানাজাও পড়িয়েছিলেন, আবেগে কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “কখনও ভাবিনি আমাকে তোফাজ্জলেরও জানাজা পড়াতে হবে। আশা করেছিলাম, ও আমার জানাজায় অংশগ্রহণ করবে। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস আমাকে ওর জানাজা পড়াতে হলো।”
পরিবারের সদস্যরা ও স্থানীয় ব্যক্তিরা তোফাজ্জলের জন্য বিচার দাবি করে বলেন, এমন হত্যাকাণ্ড যেন আর কারও ক্ষেত্রে না ঘটে। তোফাজ্জলের চাচাতো ভাই ফারুক মিয়া বলেন, “তোফাজ্জলের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। আমরা এমন নিষ্ঠুর মৃত্যু আর দেখতে চাই না।”
পাথরঘাটা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এনামুল হোসেনও এই মর্মান্তিক ঘটনায় শোক প্রকাশ করে বলেন, “তোফাজ্জল ছিল আমার আপন ভাইয়ের মতো। ওর সাথে সময় কাটানো ছিল এক অনন্য অভিজ্ঞতা। এমন মৃত্যু মেনে নেওয়া খুব কঠিন। আমরা হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”
উল্লেখ্য, গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে তোফাজ্জলকে আটক করে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। সেই নির্যাতনের ফলে প্রাণ হারায় তোফাজ্জল, যার বাড়ি বরগুনার কাঁঠালতলী ইউনিয়নের তালুকের চরদুয়ানী গ্রামে।