ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ছাত্রদের হাতে নির্মম অত্যাচারের শিকার হয়ে তোফাজ্জল নামে এক ব্যক্তি মারা গেছেন। বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার সন্তান তোফাজ্জল ছিলেন একজন স্বজ্জন, পরোপকারী ও নেতৃত্বগুণ সম্পন্ন ছাত্রনেতা। তবে ব্যক্তিগত জীবনে প্রেমঘটিত আঘাতের কারণে প্রথমে কিছুটা মানসিক ভারসাম্য হারান। এর কিছুদিনের মধ্যে তিনি পরিবারের বড় এক দুর্ঘটনার মুখোমুখি হন, যখন তার মা, বাবা ও একমাত্র বড় ভাই অল্প সময়ের ব্যবধানে মারা যান।
পরিবার ও অভিভাবক হারানোর শোকে তিনি পুরোপুরি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন এবং গত ৩-৪ বছর ধরে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়াতেন। খাবার ও কিছু অর্থ ছাড়া তার তেমন কোনো চাহিদা ছিল না। বিগত ২-৩ বছর তিনি প্রায়ই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে বিচরণ করতেন। ধারণা করা হচ্ছে, আজও তিনি খাবারের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এফএইচ হলে গিয়েছিলেন।
দুঃখজনকভাবে, কিছু শিক্ষার্থী তোফাজ্জলকে ভুলবশত চোর ভেবে তাকে নির্মমভাবে মারধর করে। সাংবাদিক কানন উপস্থিত থেকে শিক্ষার্থীদের তোফাজ্জলের প্রকৃত অবস্থান সম্পর্কে জানালেও সেই নির্মম নির্যাতন থামেনি, যার ফলে তিনি মারা যান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের এই অমানবিক আচরণের ফলে একটি নিরপরাধ প্রাণের অকাল মৃত্যু ঘটল, আর দেশের অন্যতম প্রাচীন ও গৌরবময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কলঙ্কিত হলো। তোফাজ্জলের পরিবারের কেউই বেঁচে নেই, তাই হত্যার বিচার চাওয়ার মতো পরিবারে আর কেউ অবশিষ্ট নেই। তবে দেশের আইন প্রতিষ্ঠিত হলে সাধারণ মানুষ হিসেবে আমরা সবাই তার হত্যার বিচার নিশ্চিত করতে আইনি প্রক্রিয়ায় লড়াই করব।
এই ঘটনাটি বাংলাদেশের সমাজ ও শিক্ষাব্যবস্থার জন্য একটি গভীর প্রশ্নচিহ্ন তুলে ধরেছে।